২৭ মার্চ ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১৩ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দোল উৎসবেও মুসলিমদের নিষেধাজ্ঞার দাবি অসমের মন্ত্রীর

সুস্মিতা
  • আপডেট : ৫ মার্চ ২০২৫, বুধবার
  • / 6

Warning: Attempt to read property "post_excerpt" on null in /home/u419551674/domains/puberkalom.in/public_html/wp-content/themes/NewsFlash-Pro/template-parts/common/single_one.php on line 122

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: প্রথমে কুম্ভমেলা, পরবর্তীতে দোল উৎসবেও মুসলিমদের নিষেধাজ্ঞা জারি করতে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়েছে হিন্দুত্ববাদীরা। এবার অসমের এক মন্ত্রী হিন্দুদের অনুষ্ঠানে মুসলিমদের নিষেধাজ্ঞার কথা প্রকাশ্যে ঘোষণা করলেন। অসমের স্বাস্থ্যমন্ত্রী অশোক সিংঘল দিন কয়েক আগে ঢেকিয়াজুলির এক সভায় উসকানি দিয়ে বলেন, ‘হিন্দুদের অনুষ্ঠানে মুসলিমরা কেন দোকান খুলবে? হিন্দু ও মুসলিমদের ধর্মীয় রীতি-নীতি সম্পূর্ণ আলাদা। আমরা যাদের সঙ্গে আছি সম্পূর্ণ একশো শতাংশ আছি। যাদের সঙ্গে নেই। এক শতাংশও নেই। হিন্দুদের অনুষ্ঠানে মুসলিমদের দোকান খোলার সুযোগ দিলে সেই হিন্দুদের সঙ্গে আমরা নেই।’
ওই সভায় উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী সিংঘল বলেন, ‘আপনারা ভালো করে প্রচার করুন আমাদের সরকার মুসলিমদের সঙ্গে নেই। আমরা হিন্দুদের সঙ্গে আছি।’ মন্ত্রীর এই বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই রাজ্যজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। মন্ত্রী অশোক সিংঘলের অপসারণের দাবিতে মঙ্গলবার বিধানসভায় সোচ্চার হন বিরোধীরা। মন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বাধীকারভঙ্গের অভিযোগ তুলে বিধানসভায় আলোচনার দাবি জানান এআইইউডিএফ-এর বিধায়করা। সমস্ত বিরোধী বিধায়করা এতে সমর্থন জানান। কিন্তু অধ্যক্ষ এ বিষয়ে আলোচনার সুযোগ দেননি। উলটে কুড়ি মিনিটের জন্য অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেন। পরে অধিবেশন শুরু হলে ইউডিএফ বিধায়করা ফের এই বিষয়ে সরব হলে তাদের সকলকে একদিনের জন্য বহিষ্কার করেন অধ্যক্ষ।
এদিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী অশোক সিংঘলের বিরুদ্ধে অসমে বৈষ্ণব ধর্ম আন্দোলনের হোতা শ্রীমন্ত শংকরদেবকে অপমান করার অভিযোগ উঠেছে। গুয়াহাটি প্রেস ক্লাবের তরফ থেকে এই অভিযোগ তোলা হয়েছে। প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে শংকরদেবের ‘ভাওনা’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে মন্ত্রী অশোক সিংঘলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। আমন্ত্রণ পত্র নিয়ে মন্ত্রীর কাছে গেলে তিনি বলেন, ‘ভাওনা অনুষ্ঠান সাম্প্রদায়িক। তা বন্ধ করে দেওয়া উচিত।’ সর্বধর্ম সমন্বয়ের ভাওনাকে এভাবে অপমান করেছেন বলে প্রেস ক্লাবের এক সদস্য সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে জানান। এরপরই মনত্রীর বিরুদ্ধে সরব হয়েছে শ্রীমন্ত শংকরদেবের অনুগামী থেকে শুরু করে বিভিন্ন দল ও সংগঠন।
বিরোধীদের অভিযোগ, সংঘ পরিবারের আদর্শে পরিচালিত বিজেপি নীতিগতভাবে ব্রাহ্মণ্যবাদে বিশ্বাসী। বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের বিরোধী। তাদের উদ্দেশ্য এক ধর্ম, এক ভাষা, এক দেশ নীতি চাপিয়ে দেওয়া। এই লক্ষ্য পূরণ করতে ব্রাহ্মণ্যবাদ-বিরোধী ধর্মকে বিজেপি সহ্য করতে পারে না। এজন্য শ্রীমন্ত শংকরদেবের বৈষ্ণব ধর্মের অপমান করেছেন মন্ত্রী সিংঘল। এদিকে, শংকরদেবের ধর্মীয় ভাবনাকে অপমান করা মন্ত্রীকে আড়াল করার চেষ্টায় নেমেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি জানিয়েছেন, কোনও বিষয় জানতে গেলে আমাকে জিজ্ঞাসা করবেন। কোনও মন্ত্রীকে প্রশ্ন করা দরকার নেই।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

দোল উৎসবেও মুসলিমদের নিষেধাজ্ঞার দাবি অসমের মন্ত্রীর

আপডেট : ৫ মার্চ ২০২৫, বুধবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: প্রথমে কুম্ভমেলা, পরবর্তীতে দোল উৎসবেও মুসলিমদের নিষেধাজ্ঞা জারি করতে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়েছে হিন্দুত্ববাদীরা। এবার অসমের এক মন্ত্রী হিন্দুদের অনুষ্ঠানে মুসলিমদের নিষেধাজ্ঞার কথা প্রকাশ্যে ঘোষণা করলেন। অসমের স্বাস্থ্যমন্ত্রী অশোক সিংঘল দিন কয়েক আগে ঢেকিয়াজুলির এক সভায় উসকানি দিয়ে বলেন, ‘হিন্দুদের অনুষ্ঠানে মুসলিমরা কেন দোকান খুলবে? হিন্দু ও মুসলিমদের ধর্মীয় রীতি-নীতি সম্পূর্ণ আলাদা। আমরা যাদের সঙ্গে আছি সম্পূর্ণ একশো শতাংশ আছি। যাদের সঙ্গে নেই। এক শতাংশও নেই। হিন্দুদের অনুষ্ঠানে মুসলিমদের দোকান খোলার সুযোগ দিলে সেই হিন্দুদের সঙ্গে আমরা নেই।’
ওই সভায় উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী সিংঘল বলেন, ‘আপনারা ভালো করে প্রচার করুন আমাদের সরকার মুসলিমদের সঙ্গে নেই। আমরা হিন্দুদের সঙ্গে আছি।’ মন্ত্রীর এই বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই রাজ্যজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। মন্ত্রী অশোক সিংঘলের অপসারণের দাবিতে মঙ্গলবার বিধানসভায় সোচ্চার হন বিরোধীরা। মন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বাধীকারভঙ্গের অভিযোগ তুলে বিধানসভায় আলোচনার দাবি জানান এআইইউডিএফ-এর বিধায়করা। সমস্ত বিরোধী বিধায়করা এতে সমর্থন জানান। কিন্তু অধ্যক্ষ এ বিষয়ে আলোচনার সুযোগ দেননি। উলটে কুড়ি মিনিটের জন্য অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেন। পরে অধিবেশন শুরু হলে ইউডিএফ বিধায়করা ফের এই বিষয়ে সরব হলে তাদের সকলকে একদিনের জন্য বহিষ্কার করেন অধ্যক্ষ।
এদিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী অশোক সিংঘলের বিরুদ্ধে অসমে বৈষ্ণব ধর্ম আন্দোলনের হোতা শ্রীমন্ত শংকরদেবকে অপমান করার অভিযোগ উঠেছে। গুয়াহাটি প্রেস ক্লাবের তরফ থেকে এই অভিযোগ তোলা হয়েছে। প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে শংকরদেবের ‘ভাওনা’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে মন্ত্রী অশোক সিংঘলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। আমন্ত্রণ পত্র নিয়ে মন্ত্রীর কাছে গেলে তিনি বলেন, ‘ভাওনা অনুষ্ঠান সাম্প্রদায়িক। তা বন্ধ করে দেওয়া উচিত।’ সর্বধর্ম সমন্বয়ের ভাওনাকে এভাবে অপমান করেছেন বলে প্রেস ক্লাবের এক সদস্য সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে জানান। এরপরই মনত্রীর বিরুদ্ধে সরব হয়েছে শ্রীমন্ত শংকরদেবের অনুগামী থেকে শুরু করে বিভিন্ন দল ও সংগঠন।
বিরোধীদের অভিযোগ, সংঘ পরিবারের আদর্শে পরিচালিত বিজেপি নীতিগতভাবে ব্রাহ্মণ্যবাদে বিশ্বাসী। বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের বিরোধী। তাদের উদ্দেশ্য এক ধর্ম, এক ভাষা, এক দেশ নীতি চাপিয়ে দেওয়া। এই লক্ষ্য পূরণ করতে ব্রাহ্মণ্যবাদ-বিরোধী ধর্মকে বিজেপি সহ্য করতে পারে না। এজন্য শ্রীমন্ত শংকরদেবের বৈষ্ণব ধর্মের অপমান করেছেন মন্ত্রী সিংঘল। এদিকে, শংকরদেবের ধর্মীয় ভাবনাকে অপমান করা মন্ত্রীকে আড়াল করার চেষ্টায় নেমেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি জানিয়েছেন, কোনও বিষয় জানতে গেলে আমাকে জিজ্ঞাসা করবেন। কোনও মন্ত্রীকে প্রশ্ন করা দরকার নেই।