২৭ মার্চ ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১২ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে ঘূর্ণিঝড় দানা, শনিবার থেকে আবহাওয়ার উন্নতি

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৪, শুক্রবার
  • / 3

পুবের কলম প্রতিবেদক: শক্তি হারিয়ে একটি সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে ‘দানা’। ঘূর্ণিঝড়টি ক্রমশ উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ধীরে ধীরে শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপের রূপ নেবে দানা। রাজ্যে আর সেইভাবে বড়সড় দুর্যোগের সম্ভাবনা নেই। ঘূর্ণিঝড়টি ছত্তিশগড় ও মধ্যপ্রদেশ অভিমুখে এগোবে বলে পূর্বাভাস আবহাওয়া দফতরের।

 

শনিবার থেকে রাজ্যে আবহাওয়ার উন্নতি হবে। কলকাতায় বিক্ষিপ্তভাবে হালকা বৃষ্টি চললেও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।

শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে ঘূর্ণিঝড় দানা, শনিবার থেকে আবহাওয়ার উন্নতি

 

বৃহস্পতিবার সারারাত নবান্ন থেকে ঘূর্ণিঝড়ের গতিপ্রকৃতির দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ওড়িশার কেন্দ্রাপাড়ায় দানার ল্যান্ডফল শুরু হয়। স্থলভাগে আঘাত হানার সময় ঝড়টির গতি ছিল ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত।

 

২৫ অক্টোবর, শুক্রবার ভোরে স্থলভাগ অতিক্রম করার পরেই গতি কমতে শুরু করেছে।

শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে ঘূর্ণিঝড় দানা, শনিবার থেকে আবহাওয়ার উন্নতি

ওড়িশার কেন্দ্রাপাড়া জেলার ভিতরকণিকা এবং ভদ্রকের ধামরার প্রশাসনিক প্রধান দিলীপ রাউত রাই জানান, তাদের কাছে প্রাণহানির কোনও খবর নেই। তবে ধামরার উপকূলীয় সংলগ্ন গ্রামগুলিতে গাছ উপড়ে রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ার পাশাপাশি কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশে দানা নিয়ে আশঙ্কার ঘনঘটা থাকলেও ঝড় বা বড় ধরনের দুর্যোগের সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

 

দানার প্রভাবে শুক্রবার ব্যাপক বৃষ্টি হয় কলকাতা সহ তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে।

শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে ঘূর্ণিঝড় দানা, শনিবার থেকে আবহাওয়ার উন্নতি

 

তবে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে জেলায় জেলায় চাষের বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। সুন্দরবন বিষয়ক মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা জানিয়েছেন, ভারী বৃষ্টিপাত ও ঝড়ের কারণে সুন্দরবন বেল্টের অনেক এলাকায় সমুদ্রের জল ঢুকে পড়ায় জমির সবজি নষ্ট হয়ে গেছে।

কৃষকদের ক্ষতির পরিমাণ সার্ভে করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ৪৮ ঘণ্টার পরে সম্পূর্ণ সার্ভে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। তবে দুর্যোগের আতঙ্কে এনডিআরএফকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
জেলাগুলির মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পূর্ব মেদিনীপুর। এই জেলাটিতে প্রায় ২৫০টি বাড়ি ভেঙে পড়েছে, উপড়ে গেছে ১৭৫টি বিদ্যুতের খুঁটি, ২৫০’র বেশি গাছ। ক্ষতিগ্রস্ত ৩০০-৪০০ কাঁচা বাড়ি। বহু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন। বাঁকুড়ায় বাঁধ ভেঙে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার ভারী বৃষ্টির জেরে কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণ একাধিক এলাকা জলমগ্ন।

শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে ঘূর্ণিঝড় দানা, শনিবার থেকে আবহাওয়ার উন্নতি

 

রাস্তাঘাটে গাড়ির সংখ্যাও ছিল কম। দুর্ভোগে পড়তে হয় নিত্যাযাত্রীদের। দানা আতঙ্কে কলকাতা সহ তার আশেপাশের অঞ্চলে দোকান পাট বেশির ভাগই বন্ধ ছিল।

 

তবে পরিস্থিতি আগের চেয়ে স্বাভাবিক হওয়ার ওড়িশার ভুবনেশ্বরের বিজু পট্টনায়ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং কলকাতার নেতাজি সুভাষ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সকাল ৮টা থেকে ফের বিমান চলাচল শুরু হয়।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে দুটি বিমানবন্দরে বিমান চলাচল বন্ধ ছিল। পাশাপাশি এদিন ১০টা নাগাদ শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় ট্রেন চলাচল শুরু হয়৷

শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে ঘূর্ণিঝড় দানা, শনিবার থেকে আবহাওয়ার উন্নতি

Read more: গুলমার্গে সেনাবাহিনীর গাড়িতে জঙ্গি হামলা, নিহত ৪, আহত ৩

ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি জানিয়েছেন, উপকূলীয় এলাকার উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ও নিচু এলাকা থেকে প্রায় পাঁচ লাখ ৮৪ হাজার মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। যদিও সরকার প্রাথমিকভাবে ১০ লক্ষ মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে ঘূর্ণিঝড় দানা, শনিবার থেকে আবহাওয়ার উন্নতি

আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৪, শুক্রবার

পুবের কলম প্রতিবেদক: শক্তি হারিয়ে একটি সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে ‘দানা’। ঘূর্ণিঝড়টি ক্রমশ উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ধীরে ধীরে শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপের রূপ নেবে দানা। রাজ্যে আর সেইভাবে বড়সড় দুর্যোগের সম্ভাবনা নেই। ঘূর্ণিঝড়টি ছত্তিশগড় ও মধ্যপ্রদেশ অভিমুখে এগোবে বলে পূর্বাভাস আবহাওয়া দফতরের।

 

শনিবার থেকে রাজ্যে আবহাওয়ার উন্নতি হবে। কলকাতায় বিক্ষিপ্তভাবে হালকা বৃষ্টি চললেও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।

শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে ঘূর্ণিঝড় দানা, শনিবার থেকে আবহাওয়ার উন্নতি

 

বৃহস্পতিবার সারারাত নবান্ন থেকে ঘূর্ণিঝড়ের গতিপ্রকৃতির দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ওড়িশার কেন্দ্রাপাড়ায় দানার ল্যান্ডফল শুরু হয়। স্থলভাগে আঘাত হানার সময় ঝড়টির গতি ছিল ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত।

 

২৫ অক্টোবর, শুক্রবার ভোরে স্থলভাগ অতিক্রম করার পরেই গতি কমতে শুরু করেছে।

শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে ঘূর্ণিঝড় দানা, শনিবার থেকে আবহাওয়ার উন্নতি

ওড়িশার কেন্দ্রাপাড়া জেলার ভিতরকণিকা এবং ভদ্রকের ধামরার প্রশাসনিক প্রধান দিলীপ রাউত রাই জানান, তাদের কাছে প্রাণহানির কোনও খবর নেই। তবে ধামরার উপকূলীয় সংলগ্ন গ্রামগুলিতে গাছ উপড়ে রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ার পাশাপাশি কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশে দানা নিয়ে আশঙ্কার ঘনঘটা থাকলেও ঝড় বা বড় ধরনের দুর্যোগের সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

 

দানার প্রভাবে শুক্রবার ব্যাপক বৃষ্টি হয় কলকাতা সহ তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে।

শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে ঘূর্ণিঝড় দানা, শনিবার থেকে আবহাওয়ার উন্নতি

 

তবে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে জেলায় জেলায় চাষের বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। সুন্দরবন বিষয়ক মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা জানিয়েছেন, ভারী বৃষ্টিপাত ও ঝড়ের কারণে সুন্দরবন বেল্টের অনেক এলাকায় সমুদ্রের জল ঢুকে পড়ায় জমির সবজি নষ্ট হয়ে গেছে।

কৃষকদের ক্ষতির পরিমাণ সার্ভে করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ৪৮ ঘণ্টার পরে সম্পূর্ণ সার্ভে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। তবে দুর্যোগের আতঙ্কে এনডিআরএফকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
জেলাগুলির মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পূর্ব মেদিনীপুর। এই জেলাটিতে প্রায় ২৫০টি বাড়ি ভেঙে পড়েছে, উপড়ে গেছে ১৭৫টি বিদ্যুতের খুঁটি, ২৫০’র বেশি গাছ। ক্ষতিগ্রস্ত ৩০০-৪০০ কাঁচা বাড়ি। বহু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন। বাঁকুড়ায় বাঁধ ভেঙে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার ভারী বৃষ্টির জেরে কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণ একাধিক এলাকা জলমগ্ন।

শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে ঘূর্ণিঝড় দানা, শনিবার থেকে আবহাওয়ার উন্নতি

 

রাস্তাঘাটে গাড়ির সংখ্যাও ছিল কম। দুর্ভোগে পড়তে হয় নিত্যাযাত্রীদের। দানা আতঙ্কে কলকাতা সহ তার আশেপাশের অঞ্চলে দোকান পাট বেশির ভাগই বন্ধ ছিল।

 

তবে পরিস্থিতি আগের চেয়ে স্বাভাবিক হওয়ার ওড়িশার ভুবনেশ্বরের বিজু পট্টনায়ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং কলকাতার নেতাজি সুভাষ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সকাল ৮টা থেকে ফের বিমান চলাচল শুরু হয়।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে দুটি বিমানবন্দরে বিমান চলাচল বন্ধ ছিল। পাশাপাশি এদিন ১০টা নাগাদ শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় ট্রেন চলাচল শুরু হয়৷

শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে ঘূর্ণিঝড় দানা, শনিবার থেকে আবহাওয়ার উন্নতি

Read more: গুলমার্গে সেনাবাহিনীর গাড়িতে জঙ্গি হামলা, নিহত ৪, আহত ৩

ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি জানিয়েছেন, উপকূলীয় এলাকার উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ও নিচু এলাকা থেকে প্রায় পাঁচ লাখ ৮৪ হাজার মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। যদিও সরকার প্রাথমিকভাবে ১০ লক্ষ মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল।