১৯ মার্চ ২০২৫, বুধবার, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শহরে ফের ট্রলি ব্যাগ থেকে দেহ উদ্ধার, পুলিশি তৎপরতায় গ্রেফতার ২   

আবুল খায়ের
  • আপডেট : ১২ মার্চ ২০২৫, বুধবার
  • / 1

পুবের কলম প্রতিবেদক: ফের চাঞ্চল্য, কলকাতায় ট্রলি ব্যাগ থেকে ব্যবসায়ীর দেহ উদ্ধার। ঘটনাটি ঘটেছে ঘোলায় কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের ধারে। তবে পুলিশি তৎপরতায় ঘটনার কয়েক ঘন্টার মধ্যে কিনারা করে পুলিশ। ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আকাশি রঙের ট্রলি ব্যাগ থেকে উদ্ধার হয়েছে মুখ, হাত-পায়ে টেপ জড়ানো মৃতদেহ। মৃতের নাম ভাগারাম সিং, রাজস্থানের পালির বাসিন্দা। বড়বাজারে কাপড়ের ব্যবসা করতেন ভাগারাম এবং ধৃত কৃষ্ণারাম ও করণ।

জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে দমদম নাগেরবাজার থেকে একটি অ্যাপ ক্যাবে ওঠেন দুই যুবক। সঙ্গে ছিল একটি ট্রলি ব্যাগ ও একটি বস্তা। গন্তব্য ছিল ঘোলার মহিষপোতা সংলগ্ন কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে। নির্জন এলাকায় গাড়ি থামানোর নির্দেশ দেন তাঁরা এবং গাড়ির ডিকি থেকে ট্রলি ব্যাগ নামান। ব্যাগের অস্বাভাবিক ওজন দেখে সন্দেহ হয় চালকের। তিনি জানতে চান, ব্যাগের ভেতর কী রয়েছে এবং কেন নির্জন জায়গায় নামতে বলা হলো। এরপরই দুই যুবকের সঙ্গে তাঁর বচসা শুরু হয়। ঠিক সেই মুহূর্তে ঘোলা থানার টহলদারি পুলিশের গাড়ি সেখানে পৌঁছে যায়। পুলিশ দেখেই এক যুবক পালিয়ে যান, কিন্তু অপর যুবককে ধরে ফেলে পুলিশ।

পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করতেই রহস্য ফাঁস হয়। ট্রলি ব্যাগ খুলতেই দেখা যায়, ভেতরে একটি যুবকের দেহ, যার মুখ সেলোটেপ দিয়ে মোড়ানো ছিল। ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ঘোলা ও নাগেরবাজার থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। ব্যাগের ভেতর থেকে উদ্ধার হয় রক্তমাখা ধারালো অস্ত্র ও ৬৫ হাজার টাকা।

আরও পড়ুন: কেন ‘ইন্ডিয়া’ বলব? প্রশ্ন আরএসএস নেতার, নাম বদলের দাবি সংঘের

তদন্তে জানা গেছে, কলকাতার মুক্তারামবাবু স্ট্রিটের একটি কাপড়ের গুদামেই ভাগারাম সিংকে খুন করা হয়। প্রথমে ছুরি দিয়ে তার গলা কেটে ফেলা হয়, তারপর নাইলনের দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। হত্যার পর অভিযুক্তরা দেহটি একটি ট্রলি ব্যাগে ভরে গুদামে রেখে দেয় এবং স্বাভাবিকভাবে পোশাক বিক্রি করতে থাকে।

রাতে দেহ লোপাটের পরিকল্পনা করে দুই অভিযুক্ত কৃষ্ণরাম সিং ও করণ সিং। তারা ট্রলি ব্যাগটি নিয়ে মুক্তারামবাবু স্ট্রিট থেকে নাগেরবাজারে যায়। সেখান থেকে একটি অ্যাপ ক্যাব ভাড়া করে ঘোলায় কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের ধারে খেপলির বিলের দিকে রওনা হয়।

তবে সন্দেহ হয় ক্যাব চালক রাহুল অধিকারীর। লোকেশন দেখে কিছু অস্বাভাবিকতা টের পেয়ে তিনি পুলিশকে খবর দেন এবং একজন অভিযুক্তকে ধরে ফেলেন। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ করণ সিংকে গ্রেফতার করে, তবে কৃষ্ণরাম সিং পালিয়ে যায়। পরে মোবাইল টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে মুক্তারামবাবু স্ট্রিট থেকে তাকেও গ্রেফতার করা হয়।

খুনের উদ্দেশ্য এখনও পুরোপুরি স্পষ্ট নয়, তবে প্রাথমিকভাবে ব্যবসায়িক বিবাদের সূত্র ধরা হচ্ছে। তদন্ত চলছে, আর পুলিশ মনে করছে আরও কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসতে পারে।

কয়েকদিন আগে, কুমোরটুলিতে এক মহিলার কোপানো দেহ ট্রলি ব্যাগে ভরে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। মধ্যমগ্রামে খুনের পর ওই দেহ কুমোরটুলিতে আনা হয় বলে জানা যায়। ওই ঘটনায় এক মহিলা ও তার মেয়েকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তার পরে ফের ঘটে গেল ট্রলিব্যাগ কাণ্ড।

 

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

শহরে ফের ট্রলি ব্যাগ থেকে দেহ উদ্ধার, পুলিশি তৎপরতায় গ্রেফতার ২   

আপডেট : ১২ মার্চ ২০২৫, বুধবার

পুবের কলম প্রতিবেদক: ফের চাঞ্চল্য, কলকাতায় ট্রলি ব্যাগ থেকে ব্যবসায়ীর দেহ উদ্ধার। ঘটনাটি ঘটেছে ঘোলায় কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের ধারে। তবে পুলিশি তৎপরতায় ঘটনার কয়েক ঘন্টার মধ্যে কিনারা করে পুলিশ। ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আকাশি রঙের ট্রলি ব্যাগ থেকে উদ্ধার হয়েছে মুখ, হাত-পায়ে টেপ জড়ানো মৃতদেহ। মৃতের নাম ভাগারাম সিং, রাজস্থানের পালির বাসিন্দা। বড়বাজারে কাপড়ের ব্যবসা করতেন ভাগারাম এবং ধৃত কৃষ্ণারাম ও করণ।

জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে দমদম নাগেরবাজার থেকে একটি অ্যাপ ক্যাবে ওঠেন দুই যুবক। সঙ্গে ছিল একটি ট্রলি ব্যাগ ও একটি বস্তা। গন্তব্য ছিল ঘোলার মহিষপোতা সংলগ্ন কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে। নির্জন এলাকায় গাড়ি থামানোর নির্দেশ দেন তাঁরা এবং গাড়ির ডিকি থেকে ট্রলি ব্যাগ নামান। ব্যাগের অস্বাভাবিক ওজন দেখে সন্দেহ হয় চালকের। তিনি জানতে চান, ব্যাগের ভেতর কী রয়েছে এবং কেন নির্জন জায়গায় নামতে বলা হলো। এরপরই দুই যুবকের সঙ্গে তাঁর বচসা শুরু হয়। ঠিক সেই মুহূর্তে ঘোলা থানার টহলদারি পুলিশের গাড়ি সেখানে পৌঁছে যায়। পুলিশ দেখেই এক যুবক পালিয়ে যান, কিন্তু অপর যুবককে ধরে ফেলে পুলিশ।

পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করতেই রহস্য ফাঁস হয়। ট্রলি ব্যাগ খুলতেই দেখা যায়, ভেতরে একটি যুবকের দেহ, যার মুখ সেলোটেপ দিয়ে মোড়ানো ছিল। ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ঘোলা ও নাগেরবাজার থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। ব্যাগের ভেতর থেকে উদ্ধার হয় রক্তমাখা ধারালো অস্ত্র ও ৬৫ হাজার টাকা।

আরও পড়ুন: কেন ‘ইন্ডিয়া’ বলব? প্রশ্ন আরএসএস নেতার, নাম বদলের দাবি সংঘের

তদন্তে জানা গেছে, কলকাতার মুক্তারামবাবু স্ট্রিটের একটি কাপড়ের গুদামেই ভাগারাম সিংকে খুন করা হয়। প্রথমে ছুরি দিয়ে তার গলা কেটে ফেলা হয়, তারপর নাইলনের দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। হত্যার পর অভিযুক্তরা দেহটি একটি ট্রলি ব্যাগে ভরে গুদামে রেখে দেয় এবং স্বাভাবিকভাবে পোশাক বিক্রি করতে থাকে।

রাতে দেহ লোপাটের পরিকল্পনা করে দুই অভিযুক্ত কৃষ্ণরাম সিং ও করণ সিং। তারা ট্রলি ব্যাগটি নিয়ে মুক্তারামবাবু স্ট্রিট থেকে নাগেরবাজারে যায়। সেখান থেকে একটি অ্যাপ ক্যাব ভাড়া করে ঘোলায় কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের ধারে খেপলির বিলের দিকে রওনা হয়।

তবে সন্দেহ হয় ক্যাব চালক রাহুল অধিকারীর। লোকেশন দেখে কিছু অস্বাভাবিকতা টের পেয়ে তিনি পুলিশকে খবর দেন এবং একজন অভিযুক্তকে ধরে ফেলেন। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ করণ সিংকে গ্রেফতার করে, তবে কৃষ্ণরাম সিং পালিয়ে যায়। পরে মোবাইল টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে মুক্তারামবাবু স্ট্রিট থেকে তাকেও গ্রেফতার করা হয়।

খুনের উদ্দেশ্য এখনও পুরোপুরি স্পষ্ট নয়, তবে প্রাথমিকভাবে ব্যবসায়িক বিবাদের সূত্র ধরা হচ্ছে। তদন্ত চলছে, আর পুলিশ মনে করছে আরও কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসতে পারে।

কয়েকদিন আগে, কুমোরটুলিতে এক মহিলার কোপানো দেহ ট্রলি ব্যাগে ভরে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। মধ্যমগ্রামে খুনের পর ওই দেহ কুমোরটুলিতে আনা হয় বলে জানা যায়। ওই ঘটনায় এক মহিলা ও তার মেয়েকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তার পরে ফের ঘটে গেল ট্রলিব্যাগ কাণ্ড।