দিল্লি দাঙ্গার পাঁচ বছর পরেও ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত ক্ষতিগ্রস্তরা

- আপডেট : ৫ মার্চ ২০২৫, বুধবার
- / 5
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ‘কারবায়ে-ই মোহাব্বত’-এর একটি প্রতিবেদন অনুসারে ২০২০ সালের দিল্লি দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্তদের কোনও সুনির্দিষ্ট ক্ষতিপূরণ এখনও দেওয়া হয়নি। মানবাধিকার কর্মী হর্ষ মান্দেরের নেতৃত্বে কারবায়ে-ই-মোহাব্বত এবং আইনি সহায়তা গোষ্ঠী আমান বিরাদারি ট্রাস্ট হল সেইসব সংগঠনগুলির মধ্যে অন্যতম, যারা এখনও সহিংসতার শিকারদের জন্য লড়ে যাচ্ছেন।
প্রতিবেদন অনুসারে, যখন সহিংসতা চরমে ছিল, তখন রাজ্য সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা মন্দিরে প্রার্থনা করছিলেন। প্রাথমিকভাবে সরকার ত্রাণশিবিরও স্থাপন করেনি। পরবর্তীতে, আগে থেকেই তৈরি কিছু আশ্রয়কেন্দ্রকে ত্রাণশিবিরে রূপান্তরিত করা হয়।
এমনকী দিল্লি সরকার যে ক্ষতিপূরণ দিয়েছে তা ১৯৮৪ সালের দিল্লি দাঙ্গার শিকারদের দেওয়া ক্ষতিপূরণের তুলনায় অনেক কম। এ ছাড়াও, দিল্লি সরকার নিজেই হাইকোর্টের মাধ্যমে উত্তর-পূর্ব দিল্লি অধিকার দাবি কমিশনের কাছে ক্ষতিপূরণ নির্ধারণের দায়িত্ব হস্তান্তর করেছে। এই কমিশনটি মূলত সম্পত্তির ক্ষতি মূল্যায়ন এবং দাঙ্গাকারীদের কাছ থেকে তা পুনরুদ্ধারের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। যদিও আদালত এবং কমিশন সম্পত্তির ক্ষতির মূল্যায়ন করেছে, তবুও সেই অনুযায়ী কোনও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি।
প্রতিবেদনে ১৪৬টি ক্ষতিপূরণের মামলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যার মধ্যে ৮১ শতাংশ সম্পত্তির ক্ষতির সঙ্গে সম্পর্কিত। এর মধ্যে আবাসিক এবং বাণিজ্যিক সম্পত্তি উভয়ই অন্তর্ভুক্ত। মোট মামলার ১৮ শতাংশ শারীরিক আঘাতের ঘটনা। কোনও ক্ষেত্রেই এখন পর্যন্ত কোনওরকম অর্থ দেওয়া হয়নি।
দিল্লি সরকারের মোট বাজেট ৭৫,০০০ কোটি টাকারও বেশি (সাম্প্রতিক বাজেট অনুসারে), কিন্তু ত্রাণের জন্য মাত্র ১৫৩ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে মাত্র ২১ কোটি টাকা মঞ্জুর করা হয়েছিল।
প্রতিবেদন অনুসারে, মুসলমানদের বিরুদ্ধে মোট ১৩৯টি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছিল, যার মধ্যে ১১৪টি সম্পত্তির ক্ষতির এবং ২৫টি শারীরিক আঘাতের মামলা ছিল। বিপরীতে, অন্যান্য সম্প্রদায় থেকে মাত্র ৫টি ঘটনা রিপোর্ট করা হয়েছে, যার মধ্যে ৩টি সম্পত্তির ক্ষতির এবং ২টি শারীরিক আঘাতের।
উল্লেখ্য যে, এই সহিংসতার ঘটনায় দিল্লি পুলিশের তদন্তের ফলে মুসলিম কর্মী এবং বুদ্ধিজীবীদের জেলে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে, ঘৃণামূলক বত্তৃ«তা দেওয়ার সময় রেকর্ডে ধরা পড়া হিন্দু নেতাদের বিরুদ্ধে এখনও মামলা করা হয়নি। এমনকি অনেক নিম্ন আদালতও পুলিশি তদন্তের সমালোচনা করেছে। প্রতিবেদনে ক্ষতিপূরণ প্রক্রিয়ায় বাধা এবং প্রশাসনিক বিলম্বের বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। এ থেকে স্পষ্ট যে দীর্ঘ অপেক্ষা সহিংসতার ক্ষতকে আরও গভীর করেছে।