তীব্র প্রতিরোধ হবে, শাহকে হুঁশিয়ারি কুকিদের

- আপডেট : ৭ মার্চ ২০২৫, শুক্রবার
- / 8
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিরাপত্তা পর্যালোচনা বৈঠকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, ৮ মার্চ থেকে মণিপুরের সবত্র মুক্ত চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে। কোনও বাধা বরদাশ্ত করা হবে না। নিরাপত্তা আধিকারিকদের এই নির্দেশ দিয়েছিলেন শাহ। আর এবার এই ইস্যুতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে কড়া হুঁশিয়ারি দিল কুকিরা। তাদের সাফ কথা, কুকি এলাকায় ঢুকতে এলে প্রতিরোধ তীব্র হবে। একইসঙ্গে কুকিরা দৃঢ়ভাবে জানিয়ে দিয়েছে, কুকি-জো’দের জন্য পৃথক স্বায়ত্তশাসন বা পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই আন্দোলন চলবে।
মণিপুরের টেংনুপাল এবং চান্দেল জেলার কুকি-জো গ্রামের স্বেচ্ছাসেবকরা জানিয়ে দিয়েছে, ৮ মার্চ থেকে মণিপুরের সমস্ত রাস্তায় অবাধ চলাচল নিশ্চিত করার জন্য কেন্দ্রের চাপের কাছে তারা মাথানত করবে না। কেন্দ্র যদি তাদের (কুকি-জো) এলাকায় জোর করে প্রবেশের কোনও চেষ্টা করে তার বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে ৮ মার্চ থেকে মণিপুরে অবাধ যাতয়াতের যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তাকে সমর্থন জানিয়ে মেইতেইরা ওই দিন বাফার জোন এলাকায় (কুকিদের গ্রাম সীমান্ত) ও পাহাড়ি এলাকায় (কুকি অধ্যুষিত) ‘শান্তি মিছিল’ করার ডাক দিয়েছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে টেংনুপাল এবং চান্দেল এই দুই জেলার কুকি অধ্যুষিত এলাকার স্বেচ্ছাসেবকদের অফিস ইস্টার্ন জোনের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাদের এলাকায় জোর করে প্রবেশের চেষ্টা হলে প্রতিরোধ জোরদার হবে। তারা সাফ জানিয়েছে, কুকি-জো জনগণের জন্য একটি আইনসভা-সহ একটি পৃথক প্রশাসন বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল প্রতিষ্ঠার আগে কুকি-জো অঞ্চলে কোনও অবাধ চলাচল বরদাশ্ত করা হবে না। এক কুকি স্বেচ্ছাসেবকের কথায়, ‘আমরা আমাদের জনগণ, আমাদের ভূমি এবং আমাদের ভবিষ্যৎ রক্ষার জন্য আমাদের অঙ্গীকারে দৃঢ় রয়েছি। আমাদের অধিকার লঙ্ঘন বা জোরপূর্বক আমাদের এলাকায় প্রবেশের যেকোনও প্রচেষ্টার কঠোর প্রতিরোধের মাধ্যমে মোকাবিলা করা হবে।’ এক কুকি-জো সমাজকর্মী বলেছেন, গ্রাম স্বেচ্ছাসেবকরা তাদের প্রতিনিধিত্ব করেছিল। ২০২৩ সালের ৩ মে জাতিগত সহিংসতা শুরু হওয়ার পর থেকে এই স্বেচ্ছাসেবকরাই তাদের গ্রামকে মেইতেইদের আক্রমণ থেকে রক্ষা করেছিল। আর এক গ্রাম স্বেচ্ছাসেবক জানান, ‘আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে অবিরাম অন্যায়, অমানবিক নৃশংসতা এবং নিয়ম করে অত্যাচার চলছে। যারা কুকি-জো জনগণকে নির্যাতন করেছে, যারা নিরপরাধদের জীবন নিয়েছে, যারা আমাদের মৌলিক অধিকার অস্বীকার করে চলেছে তাদের আমাদের জমিতে অবাধে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না। আমাদের আলাদা প্রশাসনের দাবি শুধু রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা নয়, আমাদের বেঁচে থাকা, নিরাপত্তা ও মর্যাদার প্রয়োজনে। একটি ন্যায্য এবং দীর্ঘস্থায়ী সমাধান না হওয়া পর্যন্ত যারা আমাদের নিপীড়ন করেছে তাদের আমরা আমাদের অঞ্চলে অবাধে চলাচল করতে দেব না। একটি পৃথক প্রশাসন বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল প্রতিষ্ঠার আগে কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা সরকারের সাহায্য নিয়ে অপরাধীদের সঙ্গে আমাদের পুনর্মিলনের চেষ্টা করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা সংস্থাকে গুরুতর পরিণতির মুখোমুখি হবে। কুকিদের আকাঙ্ক্ষাকে সম্মান করে এমন একটি রেজ্যুলিউশন না হওয়া পর্যন্ত কুকি-জো অঞ্চলে কোনও অবাধ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে না।