২০ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মমতার অনুষ্ঠানে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বার্লা, কাজ করতে চান ‘দিদি’র সঙ্গে

আবুল খায়ের
  • আপডেট : ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, বৃহস্পতিবার
  • / 20

পুবের কলম প্রতিবেদক: রাজনীতিতে স্থায়ী আসন থাকে না। দলবদলও একটা নিত্যকার ঘটনা সেখানে। বিরোধিতা যে কখন মিত্রতায় পরিণত হয়, তা আগে থেকে বোঝাও দুষ্কর। এই বিষয়টিই ঘটল বিজেপির প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সাংসদ জন বার্লার ক্ষেত্রে। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে প্রায় আড়াই লক্ষ ভোটের ব্যবধানে তৃণমূলকে হারিয়ে আলিপুরদুয়ারে জিতেছিলেন জন বার্লা। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের পরে রাজ্যভাগের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন বার্লা। কিন্তু ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ারে জন বার্লাকে টিকিট দেয়নি বিজেপি। তারপর থেকেই গেরুয় শিবিরের সঙ্গে সম্পর্কে ফাটল দেখা দিয়েছিল জন বার্লার। কিন্তু সেই ফাটল যে এখন বড়সড় ফাঁকে পরিণত হয়েছে, তা বোঝা গেল বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব¨্যােপাধ্যায়ের সরকারি পরিষেবা প্রদানের সভায় জন বার্লা যোগদানে। এদিন জন বার্লা শুধু তৃণমূলের সরকারি অনুষ্ঠানে যোগই দেননি, তাঁর তৃণমূলের যোগান করার জল্পনার উততরে স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘দিদি আশীর্বাদ করলে অবশ্যই তাঁর সঙ্গে কাজ করব।’ বার্লার এই মন্তব্যে উত্তরবঙ্গের চা বলয়ে জোর রাজনৈতিক গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার কালচিনির সুভাষিণী চা বাগানে সরকারি পরিষেবা প্রদানের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রম জানানো হয়েছিল জন বার্লাকে। স্ত্রীয়ের চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে দিল্লিতে থাকলেও তৃণমূলের আমন্ত্রণে এদিনের সভায় যোগ দিতেই তিনি উত্তরবঙ্গে ফেরেন। বাগডোগরা বিমানব¨রে বলেন, সরকারের তরফে বিশেষ নিমন্ত্রণ পেয়েছি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডেকেছেন, তাই যাচ্ছি। সরকারি অনুষ্ঠান হওয়ায় বৃহস্পতিবার তিনি তৃণমূলে যোগদান না করলেও মুখ্যমন্ত্রীকে দেখমাত্র হাতজোড় করে প্রণাম জানান। কয়েক সেকেন্ড কথাও বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলালের সঙ্গেও কথা হয় তাঁর। যা দেখে বোঝাই যায়, জন বার্লার তৃণমূলে যোগদান শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা।
এদিন জন বার্লার গলায় বিজেপির প্রতি ক্ষোভও ঝরে পড়ে। তিনি বলেন, তরাই-ডুয়ার্সে চা বাগান বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এলাকায় বিজেপিকে আনার জন্য আমি অনেক করেছি। ২০১৯ সালে জিতে দিল্লি থেকে অনেক কাজ করতে চেয়েছিলাম। দলেরই রাজ্য এবং জেলার নেতারা সেসব রুখে দিয়েছেন। আদিবাসী সমাজকে বড় ধোঁকা দেওয়া হয়েছে। জন বার্লা দাবি করেন, সম্প্রতি উপনির্বাচনে আমি কাজ করিনি, তাই বিজেপি হেরে গিয়েছে। মনোজ টিগ্গার জয়ের ব্যবধান ৭৫ হাজারে ঠেকেছে। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, মানুষ কার পাশে থাকছে।
বিজেপির পক্ষ থেকে অবশ্য জন বার্লার এইসব মন্তব্যক গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। মনোজ টিগ্গা বলেন, বিজেপি ওঁকে সংসদ, মন্ত্রীত্ব দিয়েছে। এর বেশি সম্মান আর কী হতে পারে? দলবদল ওঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

মমতার অনুষ্ঠানে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বার্লা, কাজ করতে চান ‘দিদি’র সঙ্গে

আপডেট : ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, বৃহস্পতিবার

পুবের কলম প্রতিবেদক: রাজনীতিতে স্থায়ী আসন থাকে না। দলবদলও একটা নিত্যকার ঘটনা সেখানে। বিরোধিতা যে কখন মিত্রতায় পরিণত হয়, তা আগে থেকে বোঝাও দুষ্কর। এই বিষয়টিই ঘটল বিজেপির প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সাংসদ জন বার্লার ক্ষেত্রে। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে প্রায় আড়াই লক্ষ ভোটের ব্যবধানে তৃণমূলকে হারিয়ে আলিপুরদুয়ারে জিতেছিলেন জন বার্লা। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের পরে রাজ্যভাগের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন বার্লা। কিন্তু ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ারে জন বার্লাকে টিকিট দেয়নি বিজেপি। তারপর থেকেই গেরুয় শিবিরের সঙ্গে সম্পর্কে ফাটল দেখা দিয়েছিল জন বার্লার। কিন্তু সেই ফাটল যে এখন বড়সড় ফাঁকে পরিণত হয়েছে, তা বোঝা গেল বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব¨্যােপাধ্যায়ের সরকারি পরিষেবা প্রদানের সভায় জন বার্লা যোগদানে। এদিন জন বার্লা শুধু তৃণমূলের সরকারি অনুষ্ঠানে যোগই দেননি, তাঁর তৃণমূলের যোগান করার জল্পনার উততরে স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘দিদি আশীর্বাদ করলে অবশ্যই তাঁর সঙ্গে কাজ করব।’ বার্লার এই মন্তব্যে উত্তরবঙ্গের চা বলয়ে জোর রাজনৈতিক গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার কালচিনির সুভাষিণী চা বাগানে সরকারি পরিষেবা প্রদানের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রম জানানো হয়েছিল জন বার্লাকে। স্ত্রীয়ের চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে দিল্লিতে থাকলেও তৃণমূলের আমন্ত্রণে এদিনের সভায় যোগ দিতেই তিনি উত্তরবঙ্গে ফেরেন। বাগডোগরা বিমানব¨রে বলেন, সরকারের তরফে বিশেষ নিমন্ত্রণ পেয়েছি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডেকেছেন, তাই যাচ্ছি। সরকারি অনুষ্ঠান হওয়ায় বৃহস্পতিবার তিনি তৃণমূলে যোগদান না করলেও মুখ্যমন্ত্রীকে দেখমাত্র হাতজোড় করে প্রণাম জানান। কয়েক সেকেন্ড কথাও বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলালের সঙ্গেও কথা হয় তাঁর। যা দেখে বোঝাই যায়, জন বার্লার তৃণমূলে যোগদান শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা।
এদিন জন বার্লার গলায় বিজেপির প্রতি ক্ষোভও ঝরে পড়ে। তিনি বলেন, তরাই-ডুয়ার্সে চা বাগান বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এলাকায় বিজেপিকে আনার জন্য আমি অনেক করেছি। ২০১৯ সালে জিতে দিল্লি থেকে অনেক কাজ করতে চেয়েছিলাম। দলেরই রাজ্য এবং জেলার নেতারা সেসব রুখে দিয়েছেন। আদিবাসী সমাজকে বড় ধোঁকা দেওয়া হয়েছে। জন বার্লা দাবি করেন, সম্প্রতি উপনির্বাচনে আমি কাজ করিনি, তাই বিজেপি হেরে গিয়েছে। মনোজ টিগ্গার জয়ের ব্যবধান ৭৫ হাজারে ঠেকেছে। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, মানুষ কার পাশে থাকছে।
বিজেপির পক্ষ থেকে অবশ্য জন বার্লার এইসব মন্তব্যক গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। মনোজ টিগ্গা বলেন, বিজেপি ওঁকে সংসদ, মন্ত্রীত্ব দিয়েছে। এর বেশি সম্মান আর কী হতে পারে? দলবদল ওঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।