২৫ মার্চ ২০২৫, মঙ্গলবার, ১০ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমেরিকায় গিয়ে জো নেশানহুডের ডাক দিয়ে বিতর্কে মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ৯ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার
  • / 5

বিশেষ প্রতিবেদকঃ গোয়া ক্রনিক্যালের মুখ্য সম্পাদক স্যাভিও রডরিগজের এক খবরে দেশে শোরগোল পড়েছে। গত সোমবার তেকে সামাজিক মাধ্যমে এই খবরের জেরে তোলপাড় চলছে। নেটিজেনরা তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। যদিও খবরটি পুরনো। গত ৪ সেপ্টেম্বরের। কিন্তু জাতীয় সংবাদ মাধ্যম অজ্ঞাত কারণে খবরটিতে গুরুত্ব দেয়নি। তবে চার দিন আগে আমেরিকা থেকে একটি ভিডিয়ো ফাঁস হওয়ার পর এক নতুন বিতর্কে ফেঁসে গেছেন মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী পিইউ লালদুহোমা। এতে আর কিছু না হোক, বাংলাদেশের বর্তমান উপদেষ্টা সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনুস নর্থ ইস্ট নিয়ে যে আশংকার কথা বলেছিলেন তাতেই শিলমোহর দিচ্ছে।

গত ৪ সেপ্টেম্বর আমেরিকার ইন্ডিয়ানাপোলিসে চিন সম্প্রদায়ের এক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়ে ভাষণ দিয়েছিলেন মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা। ভাষণের বিষয় ছিল ‘রিলিজিয়ন ইন দ্য কনটেক্সট অফ দ্য জো পিপলস।’ এখানে জো বা চিন বলতে কুকি, পাইতে, মার, লুসাই ইত্যাদি জনগোষ্ঠীকে বোঝায়। যারা ভারত ও মায়ানমারে বড় সংখ্যায় বসবাস করে। মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা তাঁর ভাষণে বৃহত্তর জো জাতি ও নেশনহুড গঠনের ডাক দিয়ে বর্তমান বিতর্কের সূত্রপাত করেছেন। তিনি বলেছেন, আমাদের জনগোষ্ঠী তিন দেশে তিন সরকারের অধীনে বসবাস করে। যা আমরা কখনোই মেনে নিতে পারি না। আমাদের জনগোষ্টীকে ভারত, মায়ানমার ও বাংলাদেশ তিন দেশে তিন বাগে ভাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে। ব্রিটিশ শাসকরাই এটা করেছে। আমরা এই বিভাজন মানি না। আমাদের নিজস্ব ভূমি চাই। পৃথক নেশনহুড চাই। পুরো জো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

Read More: বিশ্বের কোনও শক্তিই আর ৩৭০ ফেরাতে পারবে না: মোদি

লালদুহোমা এখানেই থামেননি, তিনি খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদেরও একজোট হওয়ার আহ´ান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, নিজেদের মধ্যে বিভাজনের জন্য আমাদের ধর্মও বিপদের সম্মুখীন হতে চলেছে বলে আশংকা করছি। তাই চার্চের মাধ্যমে আমাদের সংঘবদ্ধ হওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। তিনি জোরের সহেগ বলেছেন, আমরা এক জাতিভুক্ত, আমরা বিভাজিত ও বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকতে পারি না। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি ঈশ্বরের ইচ্ছায় আমরা একদিন একজোট হবই। তিনিই আমাদের দেশ গড়ে দেবেন। আমরা একই নেতার অধীনে নেশনহুড গঠনের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারব।

আমেরিকার মাটিতে মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রীর এই বিতর্কিত বাষণ সম্পর্কে তথ্য দেশে আসতে কিছুটা দেরি হলেও তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে মণিপুরে যখন দেড়বছর ধরে জাতি হিংসা চলছে। বৃহস্পতিবার লালদুহোমার বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। তিনি বলেছেন, তাঁর বক্তব্য ভারতের অখণ্ডতার প্রতি চ্যালেঞ্জ স্বরূপ। মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রীর এমন মন্তব্যকে দৃঢ়ভাবে মোকাবিলা করা দরকার।

Tag :

রিপোর্টার

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

আমেরিকায় গিয়ে জো নেশানহুডের ডাক দিয়ে বিতর্কে মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী

আপডেট : ৯ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার

বিশেষ প্রতিবেদকঃ গোয়া ক্রনিক্যালের মুখ্য সম্পাদক স্যাভিও রডরিগজের এক খবরে দেশে শোরগোল পড়েছে। গত সোমবার তেকে সামাজিক মাধ্যমে এই খবরের জেরে তোলপাড় চলছে। নেটিজেনরা তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। যদিও খবরটি পুরনো। গত ৪ সেপ্টেম্বরের। কিন্তু জাতীয় সংবাদ মাধ্যম অজ্ঞাত কারণে খবরটিতে গুরুত্ব দেয়নি। তবে চার দিন আগে আমেরিকা থেকে একটি ভিডিয়ো ফাঁস হওয়ার পর এক নতুন বিতর্কে ফেঁসে গেছেন মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী পিইউ লালদুহোমা। এতে আর কিছু না হোক, বাংলাদেশের বর্তমান উপদেষ্টা সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনুস নর্থ ইস্ট নিয়ে যে আশংকার কথা বলেছিলেন তাতেই শিলমোহর দিচ্ছে।

গত ৪ সেপ্টেম্বর আমেরিকার ইন্ডিয়ানাপোলিসে চিন সম্প্রদায়ের এক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়ে ভাষণ দিয়েছিলেন মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা। ভাষণের বিষয় ছিল ‘রিলিজিয়ন ইন দ্য কনটেক্সট অফ দ্য জো পিপলস।’ এখানে জো বা চিন বলতে কুকি, পাইতে, মার, লুসাই ইত্যাদি জনগোষ্ঠীকে বোঝায়। যারা ভারত ও মায়ানমারে বড় সংখ্যায় বসবাস করে। মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা তাঁর ভাষণে বৃহত্তর জো জাতি ও নেশনহুড গঠনের ডাক দিয়ে বর্তমান বিতর্কের সূত্রপাত করেছেন। তিনি বলেছেন, আমাদের জনগোষ্ঠী তিন দেশে তিন সরকারের অধীনে বসবাস করে। যা আমরা কখনোই মেনে নিতে পারি না। আমাদের জনগোষ্টীকে ভারত, মায়ানমার ও বাংলাদেশ তিন দেশে তিন বাগে ভাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে। ব্রিটিশ শাসকরাই এটা করেছে। আমরা এই বিভাজন মানি না। আমাদের নিজস্ব ভূমি চাই। পৃথক নেশনহুড চাই। পুরো জো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

Read More: বিশ্বের কোনও শক্তিই আর ৩৭০ ফেরাতে পারবে না: মোদি

লালদুহোমা এখানেই থামেননি, তিনি খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদেরও একজোট হওয়ার আহ´ান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, নিজেদের মধ্যে বিভাজনের জন্য আমাদের ধর্মও বিপদের সম্মুখীন হতে চলেছে বলে আশংকা করছি। তাই চার্চের মাধ্যমে আমাদের সংঘবদ্ধ হওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। তিনি জোরের সহেগ বলেছেন, আমরা এক জাতিভুক্ত, আমরা বিভাজিত ও বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকতে পারি না। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি ঈশ্বরের ইচ্ছায় আমরা একদিন একজোট হবই। তিনিই আমাদের দেশ গড়ে দেবেন। আমরা একই নেতার অধীনে নেশনহুড গঠনের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারব।

আমেরিকার মাটিতে মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রীর এই বিতর্কিত বাষণ সম্পর্কে তথ্য দেশে আসতে কিছুটা দেরি হলেও তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে মণিপুরে যখন দেড়বছর ধরে জাতি হিংসা চলছে। বৃহস্পতিবার লালদুহোমার বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। তিনি বলেছেন, তাঁর বক্তব্য ভারতের অখণ্ডতার প্রতি চ্যালেঞ্জ স্বরূপ। মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রীর এমন মন্তব্যকে দৃঢ়ভাবে মোকাবিলা করা দরকার।