যোগী রাজ্যে হিন্দুত্ববাদীদের হেনস্থার শিকার হিজাব পরিহিতা মুসলিম মহিলারা
- আপডেট : ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, সোমবার
- / 1
পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ মুসলিম নারীদের হেনস্থার অভিযোগ উঠল হিন্দুতববাদী কিছু যুবকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর প্রদেশের ফিরোজাবাদ শহরের মিলিখান জাহানপুর গ্রামের একটি মেলায়। ঘটনার একটি ভিডিয়ো ৯ ফ্রেব্রুয়ারি প্রথম সোশ্যাল মিডিয়ায় সামনে আসে। যা দেখে সমাজে নিন্দার ঝড় উঠেছে। শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছে। ভিডিয়োটি ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়ে গেছে।
প্রকাশিত ভিডিয়োটিতে দেখা যাচ্ছে, কালো বোরখা পরিহিত একজন মুসলিম নারীর পিছনে দাঁড়িয়ে এক যুবক ক্রমাগত ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিয়ে যাচ্ছে। যার মধ্যে ভয় দেখানোর চেষ্টা স্পষ্ট। পাশাপাশি কদর্য অঙ্গভঙ্গি করে গাওয়া হচ্ছে হিন্দি গানের কলি, “পালত তেরা দান কিদার হ্যায়, ইয়াই তেরা হিরো ইদার হ্যায়।”(তোমার মনোযোগ কোথায়, তোমার হিরো এখানে)। জনৈক্য প্রিয়াঙ্কা তোমারের ফেসবুক লাইভ স্ট্রিমিং-এ দেখা যাচ্ছে, মহিলাদের হয়রানি করা হচ্ছে। ভিডিয়ো করার সময় তারা বের হতে চাইলে তাদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। হেনস্থাকারীরা চিৎকার করে বলছে, ডাবর তেল লাগাও এবং বাবরের নাম মুছে দাও।
এক হেনস্থাকারীকে মহিলাদের সম্পর্কে বলতে শোনা যাচ্ছে, তৃতীয় মেয়েটি দেখতে ভালোই ছিল। তার গায়ের রঙ কালো। আমি শুধু তার মুখ দেখতে পেয়েছি। তাকে শুয়োরের মতো দেখতে।
তবে হেনস্থাকারীদের এই ব্যবহারের প্রতিবাদে সরব হন আক্রান্ত কলেজ ছাত্রী ফতিমা। নির্ভীক কন্ঠে বলেন, হিজাব পড়া আমাদের অধিকার। আক্রান্ত মহিলার প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ হিন্দুতববাদী যুবকরা তাদের আক্রমণের মাত্রা বৃদ্ধি করে। তারা মহিলাদের লক্ষ্য করে থুতু ছিটিয়ে বলে, তোরা এখানে থাকিস না। ঠিক তখনই একজন বয়স্ক দোকানদার হেনস্থাকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। দোকানদারের প্রতিবাদের ফলে হেনস্থাকারীরা হতচকিত হয়ে যায়। সেই সময় মহিলারা স্থানত্যাগ করে।
এই ঘটনার প্রতিবাদে আক্রান্ত মহিলারা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশ যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ততক্ষণে হেনস্থাকারীরা পালিয়ে গেছে।
সেদিন রাতেই ঘটনার কথা জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় জানান আক্রান্ত ফতিমা। ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন জম্মু ও কাশ্মীরে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মী ওয়াকার এইচ ভাট্টি। ঘটনার নিন্দা করে তিনি একটি ভিডিয়ো বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। যদিও ফিরোজাবাদ পুলিশের পক্ষ থেকে এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করে বলা হয়েছে, “সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” তবে এই ঘটনার ইনসাফ সত্যিই পাওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে সন্দীহান অনেকেই। ক্রমাগত হিন্দুতববাদীদের লক্ষ্যবস্তু হয়ে হিজাব পরিহিত মুসলিম মহিলারা।