১৯ মার্চ ২০২৫, বুধবার, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবিতে বিশাল নাগরিক সমাবেশ

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ৯ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার
  • / 3

(চট্টগ্রাম নগরে সমাবেশ)

চট্টগ্রামঃ দাঙ্গা, অ্যাসিড আক্রমণের অভিযোগ উঠেছে ইসকনের বিরুদ্ধে। চট্টগ্রামে এক প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে বাংলাদেশে ইসকন (আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ) নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। শুক্রবার জুমার নামাযের পর নগরের আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ চত্বরে আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা এই দাবি জানান।নগরের হাজারী লেনে সংঘটিত ঘটনার প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলাম চট্টগ্রাম মহানগর শাখা এই কর্মসূচির আয়োজন করে। সমাবেশে হাজারী লেনে ওসমান আলী নামের এক ব্যবসায়ীর দোকানে হামলা এবং যৌথ বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা ও অ্যাসিড নিক্ষেপের নিন্দা জানানো হয়। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান সংগঠনের নেতারা। বক্তারা বলেন, ইসকন নিষিদ্ধ করা না হলে হেফাজতের পক্ষ থেকে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

তবে হাজারী লেনের ঘটনায় ইসকনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেছেন সংগঠনটির নেতারা। রাজধানীর স্বামীবাগ ইসকন আশ্রমে ইসকন বাংলাদেশ আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ দাবি করা হয়। এর আগে গত বুধবার গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে একই দাবি করে সংগঠনটি। হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল আন্দরকিল্লা থেকে এসে নগরের জামাল খান চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে এসে শেষ হয়। ওই সময় পুলিশ সদস্যরা কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নেয়। চট্টগ্রাম মহানগর হেফাজতে ইসলামের আহ্বায়ক মাওলানা তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন হেফাজত নেতা মাওলানা নুরনবী, আনোয়ার হোসাইনি, সালাউদ্দিন, আশরাফ বিন ইয়াকুব, মো. শহীদ, মো. রব্বানী প্রমুখ।

গত মঙ্গলবার ওসমান আলী নামের হাজারী লেনের এক ব্যবসায়ীর দেওয়া ইসকনবিরোধী ফেসবুক পোস্ট ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই পোস্টের প্রতিবাদে ৫০০ থেকে ৬০০ ব্যক্তি হাজারী লেনে জড়ো হয়ে ওসমান ও তাঁর ভাইয়ের দোকানে আগুন দিতে উদ্যত হন। এই উত্তেজনার মধ্যে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের ছয়টি টহল দল ওই এলাকায় পৌঁছায়। যৌথ বাহিনী তাঁদের দুই ভাইকে উদ্ধার করে। আইনি প্রক্রিয়ায় বিষয়টি সমাধান হবে বলে আশ্বস্ত করা হলেও কিছু ব্যক্তি আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন।

একপর্যায়ে তাঁরা অ্যাসিড নিক্ষেপ করেন যৌথ বাহিনীর সদস্যদের ওপর। এতে সেনাবাহিনীর ৫ সদস্যসহ পুলিশের ১২ সদস্য আহত হন। এ সময় এক দল ব্যক্তি ইট ছুড়ে সেনাবাহিনীর একটি পিকআপ ভ্যানের উইন্ডশিল্ড ভেঙে ফেলে। পরে যৌথ বাহিনীর ১০টি টহল দল রাত সাড়ে ১১টার দিকে হাজারী লেন এলাকায় যায়। এ সময়ও একদল ব্যক্তি আবার তাদের ওপর অ্যাসিড ছুড়তে শুরু করেন। পরে বিক্ষুব্ধ লোকজনকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটার ঘটনা ঘটে। এ সময় ৮২ জনকে আটক করে নিয়ে আসে যৌথ বাহিনী। তাঁদের মধ্যে ৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে মোট গ্রেপ্তার ৫৩ জন। তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

Tag :

রিপোর্টার

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবিতে বিশাল নাগরিক সমাবেশ

আপডেট : ৯ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার

চট্টগ্রামঃ দাঙ্গা, অ্যাসিড আক্রমণের অভিযোগ উঠেছে ইসকনের বিরুদ্ধে। চট্টগ্রামে এক প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে বাংলাদেশে ইসকন (আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ) নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। শুক্রবার জুমার নামাযের পর নগরের আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ চত্বরে আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা এই দাবি জানান।নগরের হাজারী লেনে সংঘটিত ঘটনার প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলাম চট্টগ্রাম মহানগর শাখা এই কর্মসূচির আয়োজন করে। সমাবেশে হাজারী লেনে ওসমান আলী নামের এক ব্যবসায়ীর দোকানে হামলা এবং যৌথ বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা ও অ্যাসিড নিক্ষেপের নিন্দা জানানো হয়। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান সংগঠনের নেতারা। বক্তারা বলেন, ইসকন নিষিদ্ধ করা না হলে হেফাজতের পক্ষ থেকে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

তবে হাজারী লেনের ঘটনায় ইসকনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেছেন সংগঠনটির নেতারা। রাজধানীর স্বামীবাগ ইসকন আশ্রমে ইসকন বাংলাদেশ আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ দাবি করা হয়। এর আগে গত বুধবার গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে একই দাবি করে সংগঠনটি। হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল আন্দরকিল্লা থেকে এসে নগরের জামাল খান চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে এসে শেষ হয়। ওই সময় পুলিশ সদস্যরা কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নেয়। চট্টগ্রাম মহানগর হেফাজতে ইসলামের আহ্বায়ক মাওলানা তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন হেফাজত নেতা মাওলানা নুরনবী, আনোয়ার হোসাইনি, সালাউদ্দিন, আশরাফ বিন ইয়াকুব, মো. শহীদ, মো. রব্বানী প্রমুখ।

গত মঙ্গলবার ওসমান আলী নামের হাজারী লেনের এক ব্যবসায়ীর দেওয়া ইসকনবিরোধী ফেসবুক পোস্ট ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই পোস্টের প্রতিবাদে ৫০০ থেকে ৬০০ ব্যক্তি হাজারী লেনে জড়ো হয়ে ওসমান ও তাঁর ভাইয়ের দোকানে আগুন দিতে উদ্যত হন। এই উত্তেজনার মধ্যে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের ছয়টি টহল দল ওই এলাকায় পৌঁছায়। যৌথ বাহিনী তাঁদের দুই ভাইকে উদ্ধার করে। আইনি প্রক্রিয়ায় বিষয়টি সমাধান হবে বলে আশ্বস্ত করা হলেও কিছু ব্যক্তি আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন।

একপর্যায়ে তাঁরা অ্যাসিড নিক্ষেপ করেন যৌথ বাহিনীর সদস্যদের ওপর। এতে সেনাবাহিনীর ৫ সদস্যসহ পুলিশের ১২ সদস্য আহত হন। এ সময় এক দল ব্যক্তি ইট ছুড়ে সেনাবাহিনীর একটি পিকআপ ভ্যানের উইন্ডশিল্ড ভেঙে ফেলে। পরে যৌথ বাহিনীর ১০টি টহল দল রাত সাড়ে ১১টার দিকে হাজারী লেন এলাকায় যায়। এ সময়ও একদল ব্যক্তি আবার তাদের ওপর অ্যাসিড ছুড়তে শুরু করেন। পরে বিক্ষুব্ধ লোকজনকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটার ঘটনা ঘটে। এ সময় ৮২ জনকে আটক করে নিয়ে আসে যৌথ বাহিনী। তাঁদের মধ্যে ৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে মোট গ্রেপ্তার ৫৩ জন। তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।