২৫ মার্চ ২০২৫, মঙ্গলবার, ১০ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘মিছামি দুক্কদম’ বলে অবসর নিলেন চন্দ্রচূড়

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ৮ নভেম্বর ২০২৪, শুক্রবার
  • / 6

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ‘মিছামি দুক্কদম’ অর্থাৎ ভুল হলে মাফ করবেন। শুক্রবার এমনটাই মন্তব্য করে কর্মজীবনকে সায়নারা অর্থাৎ বিদায় জানান দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। তাঁর কর্মজীবন শেষ হচ্ছে ১০ নভেম্বর। তবে মাঝে ছুটির দিন শনি এবং রবিবার হওয়ায় শুক্রবারই অবসর নিতে হয় তাঁকে। এরপরে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি পদে বসতে চলেছেন বিচারপতি সঞ্জীব খান্না। আগামী ১১ নভেম্বর থেকে তিনি প্রধান বিচারপতি পদে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।

 

এদিন এজলাসে বসে কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন প্রধান বিচারপতি। বলেন,  ‘ শনিবার থেকে ন্যায় বিচার দিতে পারব না।  কিন্তু আমি সন্তুষ্ট।’ কর্মজীবনে ‘কাউকে আঘাত করে থাকলে ক্ষমা’ করে দেবেন।

 

উল্লেখ্য, ২০২২-এর ৯ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি পদে উন্নীত হন তিনি। ২০১৬  সালে তিনি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসাবে নিযুক্ত হন। আট বছর শীর্ষ আদালতের বিভিন্ন এজলাসে বসেছেন। শুনেছেন অজস্র  মামলা। তাঁর মেয়াদ শেষ হচ্ছে রবিবার। কিন্তু ছুটির দিন হওয়ায় শুক্রবারেই তাঁকে ইতি টানতে হয়।

তিনি জানান, তাঁকে যখন জিজ্ঞেস করা হয়েছিল বিদায় অনুষ্ঠান কখন শুরু করা হবে। তিনি প্রত্যুত্তরে জানিয়েছিলেন শুক্রবার দুপুর ২টোয়। তিনি ভেবেছিলেন তার মধ্যেই সব কাজ মিটিয়ে ফেলতে পারবেন। তবে মনে সংশয় ছিল। উক্ত সময়ে কেউ আসতে পারবে কিনা।  তাঁকে বিদায় জানাতে এদিন শীর্ষ আদালতের একটি আনুষ্ঠানিক বেঞ্চ গঠন করা হয়। এদিন তাঁর বিদায়ী অনুষ্ঠানে সকলেই তাঁকে বিচার বিভাগের ‘রক স্টার’ বলে আখ্যা দেন। বিপুল সংখ্যক বিচারপতি এবং আইনজীবীরা তাঁকে বিদায় জানাতে উপস্থিত হন। সকলের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বিচারপতিরা তীর্থযাত্রীদের মতো। ঋতুর পাখি আমরা। আমাদের কাজ করি এবং চলে যাই।

বলা বাহুল্য, প্রধান বিচারপতি নিজেই বিচারপতি খান্নাকে তাঁর উত্তরসূরী হিসেবে সুপারিশ করেছেন। তিনি এদিন বলেন, বিচারপতি খান্নার হাতে দায়িত্ব অর্পণ করে আমি আশ্বস্ত বোধ করছি। তিনি নিঃসন্দেহে একজন দক্ষ নেতা। অত্যন্ত দৃঢ়, ও মর্যাদাসম্পন্ন এক ব্যক্তি। নিজের কাজ ও আদালত সম্পর্কে অত্যন্ত সচেতন।

তিনি বলেন, এই আদালতের কারণে অনেক অজানাকে জানতে পেরেছি। এমন এমন মানুষের সঙ্গে মিশেছি যাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎকার এমনিতে হয়তো সম্ভব হতো না। আমার কর্মজীবনে কাউকে কোনওভাবে আঘাত দিয়ে থাকলে ক্ষমার চোখে দেখবেন। এরপরই তিনি এক জৈন প্রবাদ “মিছামি দুক্কদম” যার অর্থ, ‘আমার সমস্ত অপকর্ম ক্ষমা করা হোক’ বলে প্রধান বিচারপতির আসন থেকে উঠে যান।

 

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

‘মিছামি দুক্কদম’ বলে অবসর নিলেন চন্দ্রচূড়

আপডেট : ৮ নভেম্বর ২০২৪, শুক্রবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ‘মিছামি দুক্কদম’ অর্থাৎ ভুল হলে মাফ করবেন। শুক্রবার এমনটাই মন্তব্য করে কর্মজীবনকে সায়নারা অর্থাৎ বিদায় জানান দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। তাঁর কর্মজীবন শেষ হচ্ছে ১০ নভেম্বর। তবে মাঝে ছুটির দিন শনি এবং রবিবার হওয়ায় শুক্রবারই অবসর নিতে হয় তাঁকে। এরপরে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি পদে বসতে চলেছেন বিচারপতি সঞ্জীব খান্না। আগামী ১১ নভেম্বর থেকে তিনি প্রধান বিচারপতি পদে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।

 

এদিন এজলাসে বসে কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন প্রধান বিচারপতি। বলেন,  ‘ শনিবার থেকে ন্যায় বিচার দিতে পারব না।  কিন্তু আমি সন্তুষ্ট।’ কর্মজীবনে ‘কাউকে আঘাত করে থাকলে ক্ষমা’ করে দেবেন।

 

উল্লেখ্য, ২০২২-এর ৯ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি পদে উন্নীত হন তিনি। ২০১৬  সালে তিনি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসাবে নিযুক্ত হন। আট বছর শীর্ষ আদালতের বিভিন্ন এজলাসে বসেছেন। শুনেছেন অজস্র  মামলা। তাঁর মেয়াদ শেষ হচ্ছে রবিবার। কিন্তু ছুটির দিন হওয়ায় শুক্রবারেই তাঁকে ইতি টানতে হয়।

তিনি জানান, তাঁকে যখন জিজ্ঞেস করা হয়েছিল বিদায় অনুষ্ঠান কখন শুরু করা হবে। তিনি প্রত্যুত্তরে জানিয়েছিলেন শুক্রবার দুপুর ২টোয়। তিনি ভেবেছিলেন তার মধ্যেই সব কাজ মিটিয়ে ফেলতে পারবেন। তবে মনে সংশয় ছিল। উক্ত সময়ে কেউ আসতে পারবে কিনা।  তাঁকে বিদায় জানাতে এদিন শীর্ষ আদালতের একটি আনুষ্ঠানিক বেঞ্চ গঠন করা হয়। এদিন তাঁর বিদায়ী অনুষ্ঠানে সকলেই তাঁকে বিচার বিভাগের ‘রক স্টার’ বলে আখ্যা দেন। বিপুল সংখ্যক বিচারপতি এবং আইনজীবীরা তাঁকে বিদায় জানাতে উপস্থিত হন। সকলের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বিচারপতিরা তীর্থযাত্রীদের মতো। ঋতুর পাখি আমরা। আমাদের কাজ করি এবং চলে যাই।

বলা বাহুল্য, প্রধান বিচারপতি নিজেই বিচারপতি খান্নাকে তাঁর উত্তরসূরী হিসেবে সুপারিশ করেছেন। তিনি এদিন বলেন, বিচারপতি খান্নার হাতে দায়িত্ব অর্পণ করে আমি আশ্বস্ত বোধ করছি। তিনি নিঃসন্দেহে একজন দক্ষ নেতা। অত্যন্ত দৃঢ়, ও মর্যাদাসম্পন্ন এক ব্যক্তি। নিজের কাজ ও আদালত সম্পর্কে অত্যন্ত সচেতন।

তিনি বলেন, এই আদালতের কারণে অনেক অজানাকে জানতে পেরেছি। এমন এমন মানুষের সঙ্গে মিশেছি যাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎকার এমনিতে হয়তো সম্ভব হতো না। আমার কর্মজীবনে কাউকে কোনওভাবে আঘাত দিয়ে থাকলে ক্ষমার চোখে দেখবেন। এরপরই তিনি এক জৈন প্রবাদ “মিছামি দুক্কদম” যার অর্থ, ‘আমার সমস্ত অপকর্ম ক্ষমা করা হোক’ বলে প্রধান বিচারপতির আসন থেকে উঠে যান।