ফুটবল টুর্নামেন্টে মুসলিম খেলোয়াড় নিষিদ্ধ, বিতর্কে প্রত্যাহার নির্দেশ

- আপডেট : ২৭ মার্চ ২০২৫, বৃহস্পতিবার
- / 246
পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: এক সময়ে ফুটবলের মাঠ কাঁপাত মহম্মদ হাবিব, আকবর এবং নঈমরা। বর্তমানে মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গলে দাপিয়ে খেলছেন সাহল আব্দুল সামাদ, সুহেল ভাটস আনোয়ার আলি এবং মহম্মদ রাকিপ। খুদে ফুটবল খেলোয়ারদের চোখে এঁদের মতো হওয়ার স্বপ্ন। খেলার মাঠ সব সময়ই ধর্ম ও জাতপাতের ঊর্ধে ছিল। সেই ফুটবল মাঠেই এখন ভিন্ন সুর শোনা যাচ্ছে। পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার একটি ক্লাব ফুটবল টুর্নামেন্টে মুসলিম খেলোয়াড়দের নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
টুর্নামেন্টের লিফলেটে দশ দফা নির্দেশাবলী রয়েছে। একদম শেষে আছে, “কোনও মুসলিম ছেলে কোনও দলেই খেলতে পারবেন না।” এরপরই তৃণমূল সাম্প্রদায়িক উস্কানির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে। ক্লাবকে সামনে রেখে বিজেপি সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা তৈরি করতে চাইছে বলে অভিযোগ করেছে তৃণমূল। বিষয়টি জানাজানি হতেই লিফলেট নিয়ে ভুল স্বীকার করে নিয়েছেন ক্লাব কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: চিত্রগ্রাহক গিল্ডে আর্থিক তছরুপ, প্রতিবাদে সভাপতির পদত্যাগ
২৯ মার্চ পাঁশকুড়ার রঘুনাথবাড়ি এলাকার কামিনাচকের কালীমাতা সঙ্ঘ দিন-রাত্রির ১৬ দলের ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছে। প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী সংক্রান্ত লিফলেটে ওই শর্ত আরোপ করা হয়। সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় ওই লিফলেট। একাধিক তৃণমূল নেতা সোশাল মিডিয়ায় লিফলেটটি পোস্ট করে বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন। কালীমাতা সঙ্ঘের অন্যতম সদস্য সন্দীপ সামন্ত বলেন, “ভুলবশত এটা হয়েছে। আমরা লিফলেট বদলে ফেলেছি। প্রতিযোগিতায় সবাই অংশ নিতে পারবেন।”
বিজেপি নেতা অঞ্জন মাইতির দাবি, “কোন ক্লাব কী লিখেছে, তার দায় বিজেপি কেন নেবে? তৃণমূল সবেতেই রাজনীতি খুঁজে বেড়ায়। হয়তো ওখানে এর আগে খেলাকে কেন্দ্র করে কোনও সাম্প্রদায়িক গোলমাল হয়েছিল। তাই ক্লাব এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”তৃণমূলের পাঁশকুড়া ব্লক সভাপতি সুজিতকুমার রায় বলেন, “ক্রীড়া ও মেলা সবার। কোনও ক্লাব ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিশেষ কোনও সম্প্রদায়কে নিষিদ্ধ করতে পারে না। শুভেন্দু অধিকারীর ভণ্ড হিন্দুত্বের জন্য এরকম ঘটনা ঘটছে।” প্রাক্তন ফুটবলার মইদুল ইসলাম বলেছেন, “ভারতবর্ষের কোনও ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় এরকম হয় বলে আমার জানা নেই। ওই ক্লাব কর্তৃপক্ষ কেন ওই কথা লিখেছেন সেটা ওঁরাই ভালো বলতে পারবেন। যদি সত্যি এরকম লেখা হয়ে থাকে, তা হলে প্রশাসনের উচিত উপযুক্ত পদক্ষেপ করা।” গণতান্ত্রিক দেশে কোনও ক্লাব ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় এরকম শর্ত দিতে পারে? এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ওয়াকিবহাল মহল।