ট্যাবের টাকা নিয়েও পরীক্ষায় বসল না প্রায় ২ হাজার পরীক্ষার্থী

- আপডেট : ৫ মার্চ ২০২৫, বুধবার
- / 8
জুলফিকার আলি, মেচেদা: গত সোমবার থেকে শুরু হয়েছে রাজ্যে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পের মাধ্যমে মাথাপিছু ১০,০০০ টাকা করে ট্যাব কেনার জন্য দেওয়া হলেও পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় প্রায় ২,০০০ পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় বসল না। জেলা শিক্ষা দফতরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর জেলায় মোট ৩০,১৬৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ১৩,৯১২ জন এবং ছাত্রী ১৬,২৫২ জন। তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পের আওতায় এই জেলার ৩২,২৪৮ জন ছাত্র-ছাত্রী ট্যাব কেনার জন্য ১০,০০০ টাকা করে পেয়েছিল, কিন্তু তারপরেও প্রায় ২০০০ পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় বসেনি।
জানা গিয়েছে, বেশ কিছু ছাত্র আর্থিক অনটনের কারণে ভিন রাজ্যে কাজ করতে চলে গেছে, আর কিছু ছাত্রীর অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে গেছে। শিক্ষার জন্য রাজ্য সরকারের একাধিক প্রকল্প থাকলেও অনেক অভিভাবক এখনও সচেতন নন, যার ফলে পড়ুয়াদের পড়াশোনা মাঝপথেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
জেলার বিভিন্ন স্কুলের পরিসংখ্যান বলছে, কুলবেড়িয়া ভীমদেব আদর্শ বিদ্যাপীঠে ৩০৮ জন ট্যাবের টাকা পেলেও পরীক্ষায় বসেছে ২৮৮ জন। বহিচবেড়িয়া হাইস্কুলে ৬৩ জন টাকা পেলেও পরীক্ষায় বসেছে ৫৯ জন। ময়না আদর্শ বিদ্যায়নে ১১৩ জন ট্যাবের টাকা পেলেও পরীক্ষা দিয়েছে মাত্র ১০১ জন।
কুলবেড়িয়া ভীমদেব আদর্শ বিদ্যাপীঠের প্রধানশিক্ষক জানান, ‘কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, সবুজ সাথী প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন সুবিধা দেওয়া সত্ত্বেও অনেক ছাত্রী অল্প বয়সে পালিয়ে বিয়ে করছে। পাশাপাশি আর্থিক অনটনের কারণে ছেলেরাও পড়াশোনা ছেড়ে কাজের সন্ধানে ভিন রাজ্যে যাচ্ছে।’
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ অপর্ণা ভট্টাচার্য বলেন, ‘প্রায় ২ হাজার পরীক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করেও পরীক্ষা দেয়নি, তবে এই মুহূর্তে সঠিক কারণ বলা কঠিন।’ সরকারি উদ্যোগে শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি পেলেও সামাজিক ও আর্থিক সমস্যার কারণে বহু ছাত্রছাত্রী উচ্চমাধ্যমিকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় বসতে পারছে না। প্রশাসনের তরফে এই সমস্যার সমাধান কতটা করা সম্ভব, সেটাই এখন দেখার।