পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: রক্তস্নাত উপত্যকা। কাঁদছে ভারত! কাঁদছে বিশ্ব! পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শোকের ছায়া দেশজুড়ে। দেশের কোণায় কোণায়  শোকসভা হচ্ছে! একজন নিরীহ ও নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা গোটা মানবজাতিকে হত্যা করারই নামান্তর। আর কোনও ব্যক্তি যদি কারও প্রাণ রক্ষা করে, সে যেন পৃথিবীর সব মানুষের প্রাণ রক্ষা করল। উক্ত উদ্ধৃতি টেনে উপত্যকার জঙ্গি হামলার ঘটনার নিন্দা জানালেন ঐতিহাসিক জামে মসজিদের শাহী ইমাম সৈয়দ আহমেদ বুখারী।

এদিন তিনি বলেন, ওই দিন যে মারা গিয়েছে সে আমার ভাই। যারা মেরেছে তারা যে ধর্মেরই হোক না কেন তারা আমাদের শত্রু। এহেন ঘটনায় আল্লাহ্‌র ক্রোধান্বিত হয়। অসহায়. নিরস্ত্র, নির্দোষ পর্যটকদের হত্যা করেছে জঙ্গিরা। শাস্তি ওদের দিতে হবেই। বেছে বেছে সিংহভাগ ক্ষেত্রে হিন্দু পর্যটককে খুন করেছে জঙ্গিরা। এই ঘটনা যুগের সব থেকে জঘন্যতম  ঘটনা। ধর্মের অপব্যবহার করে নিরীহ মানুষ হত্যার কথা ইসলাম বলে না।

শুধু ইসলাম না, অন্য যে কোনও ধর্মই এই নিয়মাবিরুদ্ধ। এগুলো ক্ষমা অগ্রহণযোগ্য ঘটনা। এই ধরনের বর্বরতা ইসলামের শিক্ষার সম্পূর্ণ পরিপন্থী। মুসলিম বলে দাবি করা সন্ত্রাসীরা যে কাণ্ড ঘটিয়েছে তা সম্পূর্ণরূপে ইসলামবিরোধী। বুখারী এদিন বিভেদের পরিবর্তে ঐক্যের আহ্বান জানান। বলেন, এখন হিন্দু ও মুসলিমে বিভক্ত হওয়ার সময় নয়। বরং জাতির সম্মান, সার্বভৌমত্ব এবং মর্যাদার জন্য দৃঢ় পাথরের মতো ঐক্যবদ্ধ থাকার সময়।

শান্তিপ্রিয় ভারতীয়রা সর্বদা দেশের অখণ্ডতা রক্ষায় বদ্ধপরিকর থাকবে। সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বের বহু দেশ যুদ্ধ এবং সহিংসতায় জড়িয়ে পড়েছে। এদিন সেটা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। একইসঙ্গে বলেন, দুঃখের বিষয়, আমাদের নিজস্ব দেশেও, ধর্মীয় বিদ্বেষ, সাম্প্রদায়িকতা এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে আস্থার ক্ষয় উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ধর্মনিরপেক্ষতা শব্দটি এখন আড় চোখে দেখে হচ্ছে। যা ভয়াবহ। জামা মসজিদের ইমামের পাশাপাশি বিশিষ্ট ইসলামী মাদ্রাসা দারুল উলুম দেওবন্দের ‘মোহতামিম’ (ব্যবস্থাপক) মুফতি আবুল কাসিম নোমানি, সংশ্লিষ্ট ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন। পাশাপাশি অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির আহ্বান জানিয়েছেন। এই হামলাকে “দেশের ঐক্য ও অখণ্ডতার জন্য গুরুতর হুমকি” বলে উল্লেখ করে নোমানি।  বলেন, “নিহতদের পরিবারের প্রতি আমাদের সমবেদনা, এবং যারা আহত হয়েছেন তারা দ্রুত আরোগ্য লাভের জন্য প্রার্থনা করছি।”