২৪ মে ২০২৫, শনিবার, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলাদেশের জড়িত থাকার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান ঢাকার

ভারত ও পশ্চিমবঙ্গের মুসলিমদের সুরক্ষা দেওয়ার দাবি বাংলাদেশের

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার
  • / 251

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: বাংলাদেশের বার্তা সংস্থা ইউএনবি এক রিপোর্ট প্রকাশ করে বলেছে, মুর্শিদাবাদে সহিংসতায় বাংলাদেশ কোনওভাবে জড়িত নয়। বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মুহাম্মদ শফিকুল আলম সেইসঙ্গে বলেছেন, বাংলাদেশ পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু মুসলিমদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ভারত সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা প্রয়োজন, এই প্রথম ঢাকা এত স্পষ্টভাবে ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমদের নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি তুলল।

পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে সম্প্রতি যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হয়েছে, তাতে ‘বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা  জড়িত আছে, এমন ধরনের একটি ট্যুইট করেছে ভারতের বার্তা সংস্থা এএনআই। এই ট্যুইটটি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়  গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন। তিনি নেতাজি ইন্ডোরে এই ট্যুইটটির উল্লেখ করে বলেন, যদি এই কথা সত্যি হয়, তাহলে তার জন্য দায়ী কে? সীমান্ত পাহারা দেওয়ার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় বাহিনী বিএসএফ-এর। তিনি মুর্শিদাবাদে সহিংসতার জন্য ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ এবং বিজেপিকেও দায়ী করেছেন।

আরও পড়ুন: নাম পরিবর্তন ঘিরে নয়া বিতর্ক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে

তবে বাংলাদেশ সংশ্লিষ্ট যে কথাগুলি বলা হয়েছে, তা নাকচ করে দিয়েছে ঢাকা। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বাংলাদেশ বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে বলেন, এই ধরনের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। মুর্শিদাবাদের সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় বাংলাদেশকে জড়ানোর যেকোনো চেষ্টাকে আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছি।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে হারিয়ে টি-২০ ক্রিকেটে ইতিহাস আমিরশাহির

শফিকুল আলম পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু মুসলিমদের কথাও ইউএনবি-কে ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, এই ধরনের সহিংস হামলায় মুসলমানদের প্রাণহানি ও সম্পদহানির ঘটনাকে আমরা গভীরভাবে নিন্দা জানাই।বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব আরও বলেন, সংখ্যালঘু মুসলিমদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ভারত সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশ সরকার আহ্বান জানাচ্ছে।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস ও এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সাক্ষাৎ

এদিকে, বাংলাদেশ বার্তা সংস্থা ইউএনবি লিখেছে, গত বুধবার কলকাতায় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পশ্চিমবঙ্গের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সম্মেলনে দেওয়া ভাষণে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর তীব্র সমালোচনা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নরেন্দ্র মোদিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনি কি বাংলাদেশের পরিস্থিতি জানেন না? আপনি ইউনূসের সঙ্গে গোপন মিটিং করুন, চুক্তি করুন। দেশের ভালো হলে খুশি হব। কিন্তু আপনাদের প্ল্যানিংটা কী? কোনো এজেন্সির মাধ্যমে ওখান থেকে লোক নিয়ে এসে দাঙ্গা করা?

বাংলাদেশিদের সম্পৃক্ত থাকার ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী যে অভিযোগ তুলেছেন, তার জবাবে বিজেপি বলছে, মুর্শিদাবাদে সহিংসতার অভিযোগে পুলিশ যতজনকে গ্রেফতার করেছে তার মধ্যে কতজন বাংলাদেশি? বিজেপির পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম মুখপাত্র কেয়া ঘোষ বিবিসি বাংলাকে বলেন, ২০০-এর বেশি মানুষ তো গ্রেফতার হয়েছে পুলিশের হাতে। এদের মধ্যে কতজন বাংলাদেশি ধরা পড়েছে, প্রকাশ করুন মুখ্যমন্ত্রী। তবে কেয়া ঘোষের বিবৃতিতে ভুল রয়েছে বলে মনে করছেন তৃণমূলের মুখপাত্ররা। তাঁদের বক্তব্য, দিল্লি ও বিজেপি থেকেই বাংলাদেশিদের জড়িত থাকার কাহিনী বলা হচ্ছে। কিন্তু তার সরকারের উপর যাতে এর দায় না আসে, সে জন্যই মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, সীমান্তে অনুপ্রবেশ আটকানোর দায় বিএসএফ-এর। আর বিএসএফ-কে নিয়ন্ত্রণ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দফতর।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

বাংলাদেশের জড়িত থাকার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান ঢাকার

ভারত ও পশ্চিমবঙ্গের মুসলিমদের সুরক্ষা দেওয়ার দাবি বাংলাদেশের

আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: বাংলাদেশের বার্তা সংস্থা ইউএনবি এক রিপোর্ট প্রকাশ করে বলেছে, মুর্শিদাবাদে সহিংসতায় বাংলাদেশ কোনওভাবে জড়িত নয়। বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মুহাম্মদ শফিকুল আলম সেইসঙ্গে বলেছেন, বাংলাদেশ পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু মুসলিমদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ভারত সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা প্রয়োজন, এই প্রথম ঢাকা এত স্পষ্টভাবে ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমদের নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি তুলল।

পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে সম্প্রতি যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হয়েছে, তাতে ‘বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা  জড়িত আছে, এমন ধরনের একটি ট্যুইট করেছে ভারতের বার্তা সংস্থা এএনআই। এই ট্যুইটটি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়  গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন। তিনি নেতাজি ইন্ডোরে এই ট্যুইটটির উল্লেখ করে বলেন, যদি এই কথা সত্যি হয়, তাহলে তার জন্য দায়ী কে? সীমান্ত পাহারা দেওয়ার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় বাহিনী বিএসএফ-এর। তিনি মুর্শিদাবাদে সহিংসতার জন্য ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ এবং বিজেপিকেও দায়ী করেছেন।

আরও পড়ুন: নাম পরিবর্তন ঘিরে নয়া বিতর্ক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে

তবে বাংলাদেশ সংশ্লিষ্ট যে কথাগুলি বলা হয়েছে, তা নাকচ করে দিয়েছে ঢাকা। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বাংলাদেশ বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে বলেন, এই ধরনের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। মুর্শিদাবাদের সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় বাংলাদেশকে জড়ানোর যেকোনো চেষ্টাকে আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছি।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে হারিয়ে টি-২০ ক্রিকেটে ইতিহাস আমিরশাহির

শফিকুল আলম পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু মুসলিমদের কথাও ইউএনবি-কে ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, এই ধরনের সহিংস হামলায় মুসলমানদের প্রাণহানি ও সম্পদহানির ঘটনাকে আমরা গভীরভাবে নিন্দা জানাই।বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব আরও বলেন, সংখ্যালঘু মুসলিমদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ভারত সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশ সরকার আহ্বান জানাচ্ছে।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস ও এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সাক্ষাৎ

এদিকে, বাংলাদেশ বার্তা সংস্থা ইউএনবি লিখেছে, গত বুধবার কলকাতায় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পশ্চিমবঙ্গের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সম্মেলনে দেওয়া ভাষণে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর তীব্র সমালোচনা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নরেন্দ্র মোদিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনি কি বাংলাদেশের পরিস্থিতি জানেন না? আপনি ইউনূসের সঙ্গে গোপন মিটিং করুন, চুক্তি করুন। দেশের ভালো হলে খুশি হব। কিন্তু আপনাদের প্ল্যানিংটা কী? কোনো এজেন্সির মাধ্যমে ওখান থেকে লোক নিয়ে এসে দাঙ্গা করা?

বাংলাদেশিদের সম্পৃক্ত থাকার ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী যে অভিযোগ তুলেছেন, তার জবাবে বিজেপি বলছে, মুর্শিদাবাদে সহিংসতার অভিযোগে পুলিশ যতজনকে গ্রেফতার করেছে তার মধ্যে কতজন বাংলাদেশি? বিজেপির পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম মুখপাত্র কেয়া ঘোষ বিবিসি বাংলাকে বলেন, ২০০-এর বেশি মানুষ তো গ্রেফতার হয়েছে পুলিশের হাতে। এদের মধ্যে কতজন বাংলাদেশি ধরা পড়েছে, প্রকাশ করুন মুখ্যমন্ত্রী। তবে কেয়া ঘোষের বিবৃতিতে ভুল রয়েছে বলে মনে করছেন তৃণমূলের মুখপাত্ররা। তাঁদের বক্তব্য, দিল্লি ও বিজেপি থেকেই বাংলাদেশিদের জড়িত থাকার কাহিনী বলা হচ্ছে। কিন্তু তার সরকারের উপর যাতে এর দায় না আসে, সে জন্যই মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, সীমান্তে অনুপ্রবেশ আটকানোর দায় বিএসএফ-এর। আর বিএসএফ-কে নিয়ন্ত্রণ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দফতর।