চালের চেয়েও ছোট তারহীন পেসমেকার বানালেন মার্কিন বিজ্ঞানীরা

- আপডেট : ৫ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার
- / 74
পুবের কলম, ওয়েব ডেস্ক: বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম পেসমেকার তৈরি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা। তারা বুধবার জানিয়েছেন, চালের দানার চেয়েও ছোট এবং তারহীন এই নতুন পেসমেকার।
এটি মাত্র এক মিলিমিটার পুরু এবং ৩.৫ মিলিমিটার লম্বা। এই অস্থায়ী হৃদস্পন্দন নিয়ন্ত্রকটি সিরিঞ্জের মাধ্যমে হৃদপিণ্ডে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব। অর্থাৎ এক্ষেত্রে কোনো অস্ত্রপোচারের প্রয়োজন নেই। পেসমেকারটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে প্রয়োজন না হলে শরীরেই দ্রবীভূত হয়ে যেতে পারে। ফলে পেসমেকার বের করার জন্য রোগীকে আবার অস্ত্রোপচারের মুখোমুখি হতে হবে না। বাজারে বর্তমানে যেসব পেসমেকার প্রচলিত, সেগুলো হৃদপিণ্ডে প্রতিস্থাপনের জন্য অস্ত্রোপচার বা সার্জারি প্রয়োজন হয়। কোনো কারণে যদি পেসমেকারের প্রয়োজন ফুরিয়ে যায়, তাহলে শরীর থেকে বের করার জন্যও অস্ত্রপোচার বা সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানুষের ওপর পরীক্ষা করার এখনও কয়েক বছর বাকি থাকলেও, ওয়্যারলেস বা তারহীন নতুন এই পেসমেকার একটি ‘রূপান্তরকারী অগ্রগতি’ হিসেবে প্রশংসিত হয়েছে। এই আবিষ্কার চিকিৎসার অন্যান্য ক্ষেত্রে অগ্রগতির জন্য উৎসাহিত করতে পারে।
বর্তমানে অস্থায়ী পেসমেকার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বসানো হয় এবং রোগীর বুকে একটি ডিভাইসের সঙ্গে তার সংযুক্ত থাকে। যখন পেসমেকার আর প্রয়োজন হয় না, তখন ডাক্তার বা নার্সরা তারগুলো টেনে বের করে দেয়, যা কখনও কখনও ক্ষতির কারণ হতে পারে। ২০১২ সালে চাঁদে হেঁটে আসা প্রথম ব্যক্তি নীল আর্মস্ট্রংয়ের অস্থায়ী পেসমেকার অপসারণের পর অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের কারণে তিনি মারা যান।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র গবেষণা লেখক জন রজার্স এএফপিকে বলেছেন, ‘আমাদের আশা, এটি চিকিৎসাক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেবে।’
গবেষণা অনুসারে, এখন পর্যন্ত, ল্যাবে ইঁদুর, শূকর, কুকুর এবং মানুষের হৃদপিণ্ডের টিস্যুর ওপর চালানো পরীক্ষায় নতুন পেসমেকারটি কার্যকরভাবে কাজ করেছে। রজার্স ধারণা করছেন পেসমেকারটি দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে মানুষের ওপর পরীক্ষা করা যেতে পারে। তিনি আরো বলেন, এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য তার ল্যাব একটি স্টার্ট-আপ চালু করেছে।