২৫ মার্চ ২০২৫, মঙ্গলবার, ১০ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পরীক্ষাকেন্দ্রে তল্লাশি নিয়ে ক্ষোভ, তুলকালাম মালদার স্কুলে

সুস্মিতা
  • আপডেট : ৫ মার্চ ২০২৫, বুধবার
  • / 6

Warning: Attempt to read property "post_excerpt" on null in /home/u419551674/domains/puberkalom.in/public_html/wp-content/themes/NewsFlash-Pro/template-parts/common/single_one.php on line 122

রিপোর্ট তলব উচ্চ মাধমিক শিক্ষা সংসদের

পুবের কলম প্রতিবেদক, মালদা: পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের ‘ফ্রিস্কিং’ (তল্লাশি) করার ঘটনায় ধুন্ধুমার বাধল কালিয়াচক-৩ ব্লকের চামাগ্রাম হাইস্কুলে। তল্লাশির সময় পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে আশালীন আচর করা হচ্ছে, এমনকী গোপনাঙ্গেও স্পর্শ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে তল্লাশির বিরোধিতা করে পরীক্ষার্থীদের একাংশ। এই ঘটনায় অভিভাবকরাও প্রতিবাদ করেন। এসময় পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে মিলিত হয়ে তল্লাশির দায়িত্বে থাকা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় নাকি ৬ শিক্ষক-শিক্ষিকা জখম হয়েছেন। বুধবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে এই ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে কালিয়াচক-৩ ব্লকের লক্ষ্মীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চামাগ্রাম হাইস্কুলে। সংশ্লিষ্ট স্কুলে একই ব্লকের কেমদিটোলা হাই মাদ্রাসা, চর সুজাপুর হাইস্কুল ও পারলালপুর হাইস্কুলের সিট পড়েছে। ছাত্র ও ছাত্রী মিলিয়ে মোট ৪৩৩ জন এই পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে। মাধ্যমিকের মত উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাতেও পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকার মুখে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের নির্দেশিকা মেনেই এই তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে দাবি। মূলত মোবাইল, নকল, স্মার্ট ঘড়ি, রঙিন জলের বোতল-সহ অন্যান্য নিষিদ্ধ সামগ্রী নিয়ে পড়ুয়ারা পরীক্ষা কেন্দ্রে যাতে প্রবেশ করতে না পারে, তারই জন্য এই পদক্ষেপ বলে জানা গিয়েচে।
এদিকে চামাগ্রাম হাইস্কুলের পরীক্ষান্দ্রে উচ্চমাধ্যমিকের প্রথম দিন এই ‘ফ্রিস্কিং’ নিয়ে কোনও সমস্যা হয় নি। কিন্তু এদিন ইংরেজি পরীক্ষার আগে ফ্রিস্কিংয়ের সময় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে বেশকিছু অভিযোগ তোলে পরীক্ষার্থীদের একাংশ। তল্লাশির নামে তাদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলে তারা। ওই পড়ুয়াদের একাংশের সঙ্গে একই সুরে সুর মিলিয়ে অভিভাবকদের একাংশও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগে শামিল হন। এরপরই ময়দানে নেমে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে তুলকালাম কাণ্ড বাধানোর ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, শিক্ষক-শিক্ষকদের উপর হামলা চালানো হয়েছে। এই ঘটনায় ৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা জখম হন। তাদের মধ্যে২ জন শিক্ষিকা রয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে আহতদের স্থানীয় বেদরাবাদ গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, ঘটনার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষাকেন্দ্রে ছুটে যান বৈষ্ণবনগর থানার আইসি, কালিয়াচকের এসডিপিও ফয়জাল রেজা, কালিয়াচক-৩ ব্লকের বিডিও সুকান্ত শিকদার প্রমুখ। বিডিও সুকান্ত সিকদার জানান, ‘অপ্রত্যাশিত ঘটনা। আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে পড়ুয়া, অভিভাবক এবং শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তল্লাশি করার সময় এমন কোনও কাজ করা ঠিক নয়, তা ছাত্রছাত্রীদের আত্মসম্মানে লাগে। সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক।’
সংশ্লিষ্ট পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছে, আমরা সঠিকভাবেই কার্য সম্পাদনে সচেষ্ট ছিলাম। কেন এই ধরনের অসভ্যতা বুঝতে পারছি না। তবে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানান, ‘ঘটনার খবর পেয়েছি। পুঙ্খনাপুঙ্খ রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছি। ৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা জখম হয়েছেন। পরীক্ষা কেন্দ্রে তল্লাশি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। সমস্ত ঘটনার রিপোর্ট তলব করা হয়েছে।’ এদিন পরীক্ষা শেষে সংসদ সভাপতি সংশ্লিষ্ট পরীক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শনে যান।
এরআগে, এদিন জেলার বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শন করেন রাজ্যের উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি ড. চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য। বুধবার তিনি কালিয়াচক-১, ইংরেজবাজার ও পুরাতন মালদা ব্লকের কয়েকটি পরীক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শন করেন। কালিয়াচক-১ ব্লকের জালালপুর হাইস্কুলে যান তিনি। সেখান থেকে যান সুজাপুর হাইস্কুলে। সেখান থেকে সোজা চলে যান সুজাপুরেরই নয়ামৌজা হাইস্কুলে। এই পরিদর্শনে তাঁর সঙ্গে ছিলেন মালদা জেলা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার আহ্বায়ক অমল ঘোষ।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

পরীক্ষাকেন্দ্রে তল্লাশি নিয়ে ক্ষোভ, তুলকালাম মালদার স্কুলে

আপডেট : ৫ মার্চ ২০২৫, বুধবার

রিপোর্ট তলব উচ্চ মাধমিক শিক্ষা সংসদের

পুবের কলম প্রতিবেদক, মালদা: পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের ‘ফ্রিস্কিং’ (তল্লাশি) করার ঘটনায় ধুন্ধুমার বাধল কালিয়াচক-৩ ব্লকের চামাগ্রাম হাইস্কুলে। তল্লাশির সময় পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে আশালীন আচর করা হচ্ছে, এমনকী গোপনাঙ্গেও স্পর্শ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে তল্লাশির বিরোধিতা করে পরীক্ষার্থীদের একাংশ। এই ঘটনায় অভিভাবকরাও প্রতিবাদ করেন। এসময় পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে মিলিত হয়ে তল্লাশির দায়িত্বে থাকা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় নাকি ৬ শিক্ষক-শিক্ষিকা জখম হয়েছেন। বুধবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে এই ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে কালিয়াচক-৩ ব্লকের লক্ষ্মীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চামাগ্রাম হাইস্কুলে। সংশ্লিষ্ট স্কুলে একই ব্লকের কেমদিটোলা হাই মাদ্রাসা, চর সুজাপুর হাইস্কুল ও পারলালপুর হাইস্কুলের সিট পড়েছে। ছাত্র ও ছাত্রী মিলিয়ে মোট ৪৩৩ জন এই পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে। মাধ্যমিকের মত উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাতেও পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকার মুখে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের নির্দেশিকা মেনেই এই তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে দাবি। মূলত মোবাইল, নকল, স্মার্ট ঘড়ি, রঙিন জলের বোতল-সহ অন্যান্য নিষিদ্ধ সামগ্রী নিয়ে পড়ুয়ারা পরীক্ষা কেন্দ্রে যাতে প্রবেশ করতে না পারে, তারই জন্য এই পদক্ষেপ বলে জানা গিয়েচে।
এদিকে চামাগ্রাম হাইস্কুলের পরীক্ষান্দ্রে উচ্চমাধ্যমিকের প্রথম দিন এই ‘ফ্রিস্কিং’ নিয়ে কোনও সমস্যা হয় নি। কিন্তু এদিন ইংরেজি পরীক্ষার আগে ফ্রিস্কিংয়ের সময় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে বেশকিছু অভিযোগ তোলে পরীক্ষার্থীদের একাংশ। তল্লাশির নামে তাদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলে তারা। ওই পড়ুয়াদের একাংশের সঙ্গে একই সুরে সুর মিলিয়ে অভিভাবকদের একাংশও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগে শামিল হন। এরপরই ময়দানে নেমে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে তুলকালাম কাণ্ড বাধানোর ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, শিক্ষক-শিক্ষকদের উপর হামলা চালানো হয়েছে। এই ঘটনায় ৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা জখম হন। তাদের মধ্যে২ জন শিক্ষিকা রয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে আহতদের স্থানীয় বেদরাবাদ গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, ঘটনার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষাকেন্দ্রে ছুটে যান বৈষ্ণবনগর থানার আইসি, কালিয়াচকের এসডিপিও ফয়জাল রেজা, কালিয়াচক-৩ ব্লকের বিডিও সুকান্ত শিকদার প্রমুখ। বিডিও সুকান্ত সিকদার জানান, ‘অপ্রত্যাশিত ঘটনা। আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে পড়ুয়া, অভিভাবক এবং শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তল্লাশি করার সময় এমন কোনও কাজ করা ঠিক নয়, তা ছাত্রছাত্রীদের আত্মসম্মানে লাগে। সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক।’
সংশ্লিষ্ট পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছে, আমরা সঠিকভাবেই কার্য সম্পাদনে সচেষ্ট ছিলাম। কেন এই ধরনের অসভ্যতা বুঝতে পারছি না। তবে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানান, ‘ঘটনার খবর পেয়েছি। পুঙ্খনাপুঙ্খ রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছি। ৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা জখম হয়েছেন। পরীক্ষা কেন্দ্রে তল্লাশি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। সমস্ত ঘটনার রিপোর্ট তলব করা হয়েছে।’ এদিন পরীক্ষা শেষে সংসদ সভাপতি সংশ্লিষ্ট পরীক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শনে যান।
এরআগে, এদিন জেলার বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শন করেন রাজ্যের উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি ড. চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য। বুধবার তিনি কালিয়াচক-১, ইংরেজবাজার ও পুরাতন মালদা ব্লকের কয়েকটি পরীক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শন করেন। কালিয়াচক-১ ব্লকের জালালপুর হাইস্কুলে যান তিনি। সেখান থেকে যান সুজাপুর হাইস্কুলে। সেখান থেকে সোজা চলে যান সুজাপুরেরই নয়ামৌজা হাইস্কুলে। এই পরিদর্শনে তাঁর সঙ্গে ছিলেন মালদা জেলা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার আহ্বায়ক অমল ঘোষ।