২৪ মে ২০২৫, শনিবার, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ‘পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র’, তোপ উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের

চামেলি দাস
  • আপডেট : ১৭ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার
  • / 128

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: দেশের রাষ্ট্রপতিকে নির্দেশ দিতে পারে না সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণে অসন্তোষ প্রকাশ করে এমনটাই মন্তব্য করলেন উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়। সম্প্রতি তামিলনাড়ু রাজ্যের দায়ের করা মামলায় সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, যে কোনও বিল নিয়ে তিন মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে রাষ্ট্রপতিকে। এই সময়সীমার পরেও কোনও বিল ফেলে রাখলে তার কারণ জানাতে হবে। রাষ্ট্রপতিকে সময় বেঁধে দেওয়ার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের এক্তিয়ার নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়।

বৃহস্পতিবার রাজ্যসভার ইন্টার্নদের নিয়ে একটি অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার সময়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের প্রসঙ্গ তোলেন ধনখড়। তিনি বলেন, ভারতীয় সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদ দেশের শীর্ষ আদালতকে বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। সাত দিন ২৪ ঘণ্টা এই ক্ষমতা রয়েছে বিচারব্যবস্থার কাছে। কিন্তু সেই ক্ষমতাকে শীর্ষ আদালত গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ‘পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র’ হিসাবে ব্যবহার করছে। বিচারব্যবস্থাকে কটাক্ষ করে ধনখড় বলেন, এখন থেকে তা হলে বিচারপতিরাই আইন প্রণয়ন করবেন। সংসদীয় কাজকর্ম করবেন।

আরও পড়ুন: ওয়াকফ সম্পত্তির চরিত্র বদল ও অমুসলিমদের সদস্য নিয়োগ নয়, বলল সুপ্রিম কোর্ট

দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি যশবন্ত বর্মার প্রসঙ্গও তোলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল। ১৪-১৫ মার্চ রাতে নয়াদিল্লিত এক বিচারপতির বাড়িতে একটি ঘটনা ঘটে। সাত দিন পর্যন্ত কেউ সেই ঘটনার কথা  জানতেও পারেননি। কেন এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতে দেরি হল তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন উপরাষ্ট্রপতি। ২১ মার্চের আগে ঘটনাটি কেউ জানতে পারেওনি বলে তিনি জানান। বিচারপতির বাড়ি থেকে নগদ টাকা উদ্ধার কাণ্ডে কেন এখনও এফআইআর দায়ের করা হল না সেই প্রসঙ্গেও প্রশ্ন তুলেছেন ধনখড়। তিনি বলেন, ‘‘ভারতের সংবিধান কেবল দেশের রাষ্ট্রপতি এবং রাজ্যপালদের আইনি প্রক্রিয়া থেকে রক্ষাকবচ দিয়েছে।” আইন-বহির্ভূতভাবে বিচারপতি বর্মা কী ভাবে রক্ষাকবচ পাচ্ছেন সে নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

সম্প্রতি তামিলনাড়ু সরকারের একটি মামলায় রাষ্ট্রপতিকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিল নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলে সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্যের আইনসভায় বিল পাশ হলে তা সম্মতির জন্য সাধারণত রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হয়। রাজ্যপাল নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিল নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে তা রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দেন। সুপ্রিম কোর্ট পর্যবেক্ষণে জানায়, রাজ্যপালের কাছ থেকে এই ধরনের বিল এলে রাষ্ট্রপতি অনির্দিষ্ট কালের জন্য তা ফেলে রাখতে পারবেন না। ভারতীয় সংবিধানে বিল নিয়ে মতামত জানানোর জন্য রাষ্ট্রপতিকে কোনও সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই এই কাজ সম্পন্ন করতে হবে। বিল হাতে পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে হবে রাষ্ট্রপতিকে। যদি বেশি সময় লাগে, সে ক্ষেত্রে তার কারণ  জানাতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের এই মন্তব্যের পরেই বৃহস্পতিবার ধনখড় বিচারপতি বর্মার নগদ-কাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে তোপ দাগেন।

 

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ‘পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র’, তোপ উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের

আপডেট : ১৭ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: দেশের রাষ্ট্রপতিকে নির্দেশ দিতে পারে না সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণে অসন্তোষ প্রকাশ করে এমনটাই মন্তব্য করলেন উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়। সম্প্রতি তামিলনাড়ু রাজ্যের দায়ের করা মামলায় সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, যে কোনও বিল নিয়ে তিন মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে রাষ্ট্রপতিকে। এই সময়সীমার পরেও কোনও বিল ফেলে রাখলে তার কারণ জানাতে হবে। রাষ্ট্রপতিকে সময় বেঁধে দেওয়ার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের এক্তিয়ার নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়।

বৃহস্পতিবার রাজ্যসভার ইন্টার্নদের নিয়ে একটি অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার সময়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের প্রসঙ্গ তোলেন ধনখড়। তিনি বলেন, ভারতীয় সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদ দেশের শীর্ষ আদালতকে বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। সাত দিন ২৪ ঘণ্টা এই ক্ষমতা রয়েছে বিচারব্যবস্থার কাছে। কিন্তু সেই ক্ষমতাকে শীর্ষ আদালত গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ‘পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র’ হিসাবে ব্যবহার করছে। বিচারব্যবস্থাকে কটাক্ষ করে ধনখড় বলেন, এখন থেকে তা হলে বিচারপতিরাই আইন প্রণয়ন করবেন। সংসদীয় কাজকর্ম করবেন।

আরও পড়ুন: ওয়াকফ সম্পত্তির চরিত্র বদল ও অমুসলিমদের সদস্য নিয়োগ নয়, বলল সুপ্রিম কোর্ট

দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি যশবন্ত বর্মার প্রসঙ্গও তোলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল। ১৪-১৫ মার্চ রাতে নয়াদিল্লিত এক বিচারপতির বাড়িতে একটি ঘটনা ঘটে। সাত দিন পর্যন্ত কেউ সেই ঘটনার কথা  জানতেও পারেননি। কেন এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতে দেরি হল তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন উপরাষ্ট্রপতি। ২১ মার্চের আগে ঘটনাটি কেউ জানতে পারেওনি বলে তিনি জানান। বিচারপতির বাড়ি থেকে নগদ টাকা উদ্ধার কাণ্ডে কেন এখনও এফআইআর দায়ের করা হল না সেই প্রসঙ্গেও প্রশ্ন তুলেছেন ধনখড়। তিনি বলেন, ‘‘ভারতের সংবিধান কেবল দেশের রাষ্ট্রপতি এবং রাজ্যপালদের আইনি প্রক্রিয়া থেকে রক্ষাকবচ দিয়েছে।” আইন-বহির্ভূতভাবে বিচারপতি বর্মা কী ভাবে রক্ষাকবচ পাচ্ছেন সে নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

সম্প্রতি তামিলনাড়ু সরকারের একটি মামলায় রাষ্ট্রপতিকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিল নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলে সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্যের আইনসভায় বিল পাশ হলে তা সম্মতির জন্য সাধারণত রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হয়। রাজ্যপাল নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিল নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে তা রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দেন। সুপ্রিম কোর্ট পর্যবেক্ষণে জানায়, রাজ্যপালের কাছ থেকে এই ধরনের বিল এলে রাষ্ট্রপতি অনির্দিষ্ট কালের জন্য তা ফেলে রাখতে পারবেন না। ভারতীয় সংবিধানে বিল নিয়ে মতামত জানানোর জন্য রাষ্ট্রপতিকে কোনও সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই এই কাজ সম্পন্ন করতে হবে। বিল হাতে পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে হবে রাষ্ট্রপতিকে। যদি বেশি সময় লাগে, সে ক্ষেত্রে তার কারণ  জানাতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের এই মন্তব্যের পরেই বৃহস্পতিবার ধনখড় বিচারপতি বর্মার নগদ-কাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে তোপ দাগেন।