০৬ জুলাই ২০২৫, রবিবার, ২১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফের এলাহাবাদ হাইকোর্টকে ভর্ৎসনা সুপ্রিম কোর্টের, আজব যুক্তিতে ধর্ষককে জামিন!

চামেলি দাস
  • আপডেট : ১৫ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার
  • / 119

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: এক স্নাতকোত্তর ছাত্রীর ধর্ষণ মামলায় এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়, নির্যাতিতা নিজেই বিপদ ডেকে এনেছিল। ঘটনার জন্য ওই ছাত্রী নিজেই দায়ী। ২০২৪ সালে ডিসেম্বরে ধর্ষণের মামলায় গ্রেফতার হয় এক যুবক। কিন্তু কিছুদিন পর এলাহাবাদ হাইকোর্ট থেকে জামিনও পেয়ে যায়। এরপরই আদালত এই রায় দেয়। এবার এলাহাবাদ হাইকোর্টের ওই পর্যবেক্ষণকে তীব্র ভর্ৎসনা করল সুপ্রিম কোর্ট। এই ধরনের মন্তব্য করার আগে সংযত হওয়া উচিত বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিল শীর্ষ আদালত।

আরও পড়ুন: নাগোর দোলায় স্ত্রীকে ছুরি দিয়ে খুন! বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের সন্দেহে খুন স্বীকার স্বামীর

আরও পড়ুন: জামার বোতাম খোলা রাখার অপরাধে ৬ মাসের কারাদণ্ড আইনজীবীর

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে নয়ডার এক ছাত্রী তাঁর তিন বান্ধবীর সঙ্গে দিল্লির একটি পানশালায় যায়। পানশালায় কয়েকজন পুরুষের সঙ্গে তাঁদের পরিচয় হয়। অভিযুক্ত যুবকও তাঁদেরই একজন। নির্যাতিতা তরুণীর দাবি, রাত তিনটে পর্যন্ত তাঁরা পান করছিলেন। এরপর অভিযুক্ত যুবক তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জোর করতে থাকেন। যুবকের কথা নির্যাতিত রাজি হন। যুবকের বাড়িতে বিশ্রামে যান। কিন্তু যুবক তাঁকে অশালীন স্পর্শ করতে থাকেন বলে তরুণী অভিযোগ করেন। গুরগাঁওয়ের এক আত্মীয়ের ফ্ল্যাটে নিয়ে গিয়ে ওই যুবক তাঁকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ করেন। অভিযুক্ত যুবক জামিনে দাবি করেছিলেন, নির্যাতিতা তাঁর সঙ্গে স্বেচ্ছায় যৌন সংসর্গে লিপ্ত হয়েছিলেন। আত্মীয়ের বাড়ি নিয়ে যাওয়া এবং ধর্ষণের অভিযোগ মিথ্যে বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: লজ্জা! নারকীয় ঘটনা মণিপুরে, গণধর্ষণের পর মহিলাদের নগ্ন হাঁটানো হল—ক্ষুদ্ধ সুপ্রিমকোর্ট

এই মামলায় এলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয়কুমার সিং বলেন, ”আদালতের পর্যবেক্ষণ, যদি নির্যাতিতার অভিযোগ সত্যিও হয়, সেক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্তে আসাই যায়, যে উনিই বিপদকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন এবং যা ঘটেছে সেজন্য তিনি নিজেই দায়ী।” নির্যাতিতা স্নাতকোত্তরের ছাত্রী, পরিণতমনস্ক এবং পরিস্থিতি বোঝার ক্ষমতা ছিল বলে হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণে জানায়।

এই পর্যবেক্ষণ নিয়েই সুপ্রিম কোর্টে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের হয়। আজ মঙ্গলবার এর শুনানিতে তীব্র ভর্ৎসনা করে বিচারপতি বিআর গাভাই ও এজি মাসিশের বেঞ্চ জানায় , “ফের এক বিচারপতির এই রকম মন্তব্য করলেন। জামিন আপনি দিতেই পারেন। কিন্তু আপনারা কী আলোচনা করছিলেন? মেয়েটি নিজে নিজের বিপদ ডেকে এনেছে? বিচারপতি হিসাবে এই মন্তব্য করার আগে সংযত ও দায়িত্বশীল হওয়া প্রয়োজন। এই ধরনের পর্যবেক্ষণ কখনই গ্রহণযোগ্য নয়।”

প্রসঙ্গত কিছুদিন আগেও এলাহাবাদ হাইকোর্টের একটি পর্যবেক্ষণ ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়। স্তন চেপে ধরা বা পাজামার দড়ি টেনে ধরা ধর্ষণের চেষ্টা নয়। এই বিতর্কিত রায়ের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ফের এলাহাবাদ হাইকোর্টকে ভর্ৎসনা সুপ্রিম কোর্টের, আজব যুক্তিতে ধর্ষককে জামিন!

আপডেট : ১৫ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: এক স্নাতকোত্তর ছাত্রীর ধর্ষণ মামলায় এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়, নির্যাতিতা নিজেই বিপদ ডেকে এনেছিল। ঘটনার জন্য ওই ছাত্রী নিজেই দায়ী। ২০২৪ সালে ডিসেম্বরে ধর্ষণের মামলায় গ্রেফতার হয় এক যুবক। কিন্তু কিছুদিন পর এলাহাবাদ হাইকোর্ট থেকে জামিনও পেয়ে যায়। এরপরই আদালত এই রায় দেয়। এবার এলাহাবাদ হাইকোর্টের ওই পর্যবেক্ষণকে তীব্র ভর্ৎসনা করল সুপ্রিম কোর্ট। এই ধরনের মন্তব্য করার আগে সংযত হওয়া উচিত বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিল শীর্ষ আদালত।

আরও পড়ুন: নাগোর দোলায় স্ত্রীকে ছুরি দিয়ে খুন! বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের সন্দেহে খুন স্বীকার স্বামীর

আরও পড়ুন: জামার বোতাম খোলা রাখার অপরাধে ৬ মাসের কারাদণ্ড আইনজীবীর

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে নয়ডার এক ছাত্রী তাঁর তিন বান্ধবীর সঙ্গে দিল্লির একটি পানশালায় যায়। পানশালায় কয়েকজন পুরুষের সঙ্গে তাঁদের পরিচয় হয়। অভিযুক্ত যুবকও তাঁদেরই একজন। নির্যাতিতা তরুণীর দাবি, রাত তিনটে পর্যন্ত তাঁরা পান করছিলেন। এরপর অভিযুক্ত যুবক তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জোর করতে থাকেন। যুবকের কথা নির্যাতিত রাজি হন। যুবকের বাড়িতে বিশ্রামে যান। কিন্তু যুবক তাঁকে অশালীন স্পর্শ করতে থাকেন বলে তরুণী অভিযোগ করেন। গুরগাঁওয়ের এক আত্মীয়ের ফ্ল্যাটে নিয়ে গিয়ে ওই যুবক তাঁকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ করেন। অভিযুক্ত যুবক জামিনে দাবি করেছিলেন, নির্যাতিতা তাঁর সঙ্গে স্বেচ্ছায় যৌন সংসর্গে লিপ্ত হয়েছিলেন। আত্মীয়ের বাড়ি নিয়ে যাওয়া এবং ধর্ষণের অভিযোগ মিথ্যে বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: লজ্জা! নারকীয় ঘটনা মণিপুরে, গণধর্ষণের পর মহিলাদের নগ্ন হাঁটানো হল—ক্ষুদ্ধ সুপ্রিমকোর্ট

এই মামলায় এলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয়কুমার সিং বলেন, ”আদালতের পর্যবেক্ষণ, যদি নির্যাতিতার অভিযোগ সত্যিও হয়, সেক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্তে আসাই যায়, যে উনিই বিপদকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন এবং যা ঘটেছে সেজন্য তিনি নিজেই দায়ী।” নির্যাতিতা স্নাতকোত্তরের ছাত্রী, পরিণতমনস্ক এবং পরিস্থিতি বোঝার ক্ষমতা ছিল বলে হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণে জানায়।

এই পর্যবেক্ষণ নিয়েই সুপ্রিম কোর্টে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের হয়। আজ মঙ্গলবার এর শুনানিতে তীব্র ভর্ৎসনা করে বিচারপতি বিআর গাভাই ও এজি মাসিশের বেঞ্চ জানায় , “ফের এক বিচারপতির এই রকম মন্তব্য করলেন। জামিন আপনি দিতেই পারেন। কিন্তু আপনারা কী আলোচনা করছিলেন? মেয়েটি নিজে নিজের বিপদ ডেকে এনেছে? বিচারপতি হিসাবে এই মন্তব্য করার আগে সংযত ও দায়িত্বশীল হওয়া প্রয়োজন। এই ধরনের পর্যবেক্ষণ কখনই গ্রহণযোগ্য নয়।”

প্রসঙ্গত কিছুদিন আগেও এলাহাবাদ হাইকোর্টের একটি পর্যবেক্ষণ ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়। স্তন চেপে ধরা বা পাজামার দড়ি টেনে ধরা ধর্ষণের চেষ্টা নয়। এই বিতর্কিত রায়ের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট।