২৪ মে ২০২৫, শনিবার, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইয়েমেনের বন্দরে মার্কিন হামলা, নিহত অন্তত ৫৮

চামেলি দাস
  • আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার
  • / 118

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: গুরুত্বপূর্ণ রাস ইসা তেলবন্দর-সহ ইয়েমেনের কয়েকটি বন্দরে চালানো মার্কিন বিমান হামলায় অন্তত ৫৮ জন নিহত ও ১২৬ জন আহত হয়েছেন। এটিই এখনও পর্যন্ত ইয়েমেনে মার্কিন বাহিনীর সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাণঘাতী হামলা বলে দাবি করেছে হুথি-ঘনিষ্ঠ সংবাদমাধ্যম আল মাসিরাহ। শুক্রবার সকালের এই হামলার ‘জবাব’ দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে ওই এলাকার নিয়ন্ত্রক হুথিরা।

আল জাজিরা জানিয়েছে, ‘যখন বন্দরটিতে লোকজন কাজে ব্যস্ত ছিল, ঠিক তখনই হামলার প্রথম চারটি বোমা বর্ষণ হয়। এ সময় ট্রাকচালক-সহ বহু সাধারণ শ্রমিক ছিলেন ঘটনাস্থলে’। স্থানীয়দের মতে, আক্রমণের আকস্মিকতায় বহু নিরীহ শ্রমিক ও কর্মী হতাহত হন। হামলার ভিডিয়ো ফুটেজে বিস্ফোরণের ভয়াবহতা, ধ্বংসস্তূপ ও সাধারণ মানুষের প্রাণহানির দৃশ্য দেখা যায়।

মূলত রাস ইসা, হুদাইদাহ ও আস-সালিফ; এই তিনটি বন্দর দিয়েই ইয়েমেনে প্রায় ৭০ শতাংশ আমদানি ও ৮০ শতাংশ মানবিক সহায়তা প্রবেশ করে। রাষ্ট্রসঘের মতে, রাস ইসা বন্দর ও তেল পাইপলাইন হল ‘অপরিহার্য ও অপরিবর্তনীয় অবকাঠামো’।

পশ্চিম এশিয়ায় মোতায়েন মার্কিন সেনার সেন্ট্রাল কমান্ডের (সেন্টিকম) তরফে জানানো হয়েছে, হুথি বিoোহীদের জ্বালানির উৎসে আঘাত হানার উদ্দেশেই এই অভিযান। ওয়াশিংটন জানিয়েছে, তারা ইয়েমেনের হুথিদের অবস্থানগুলোতে হামলা চালিয়ে যাবে যতক্ষণ না লোহিত সাগরে জাহাজ চলাচলের ওপর এই গোষ্ঠীর আক্রমণ বন্ধ হয়।  প্রসঙ্গত, গাজা ভূখণ্ডে ইসরাইলি হামলা শুরুর পরে ইরানের মদতপুষ্ট সশস্ত্র গোষ্ঠী হুথি ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকেই ইয়েমেন উপকূল থেকে ধারাবাহিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে লোহিত সাগরগামী বাণিজ্যিক জাহাজগুলির উপর। পাশাপাশি, ইসরাইলি ভূখণ্ড নিশানা করেও ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ে চলেছে তারা।

গত বছরের ডিসেম্বরে হুথি বাহিনী ইসরাইলে হাইপারসনিক (শধের চেয়ে পাঁচগুণ বা তার বেশি গতিসম্পন্ন) ক্ষেপণাস্ত্র ‘ফিলিস্তিন -২’ দিয়ে হামলা চালিয়েছিল। তারপর মার্চে মার্কিন বাহিনীর দু’দিনের হামলায় অর্ধশতাধিক নিহত হয়েছিল।

ইয়েমেনের উপর যুক্তরাষ্ট্রের বর্বর বিমান হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইরান। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই এই হামলাকে ‘রাষ্ট্রসঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক আইনের একটি সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনের দখলদারিতে এবং সেখানে চলমান গণহত্যায় ইসরাইলকে পূর্ণ সমর্থন দিতে গিয়েই যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনে এই আগ্রাসন চালিয়েছে। এতে যুক্তরাষ্ট্র নিজেই ইসরাইলের অপরাধে একপ্রকার সহযোগী ও অংশীদারে পরিণত হয়েছে।’

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ইয়েমেনের বন্দরে মার্কিন হামলা, নিহত অন্তত ৫৮

আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: গুরুত্বপূর্ণ রাস ইসা তেলবন্দর-সহ ইয়েমেনের কয়েকটি বন্দরে চালানো মার্কিন বিমান হামলায় অন্তত ৫৮ জন নিহত ও ১২৬ জন আহত হয়েছেন। এটিই এখনও পর্যন্ত ইয়েমেনে মার্কিন বাহিনীর সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাণঘাতী হামলা বলে দাবি করেছে হুথি-ঘনিষ্ঠ সংবাদমাধ্যম আল মাসিরাহ। শুক্রবার সকালের এই হামলার ‘জবাব’ দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে ওই এলাকার নিয়ন্ত্রক হুথিরা।

আল জাজিরা জানিয়েছে, ‘যখন বন্দরটিতে লোকজন কাজে ব্যস্ত ছিল, ঠিক তখনই হামলার প্রথম চারটি বোমা বর্ষণ হয়। এ সময় ট্রাকচালক-সহ বহু সাধারণ শ্রমিক ছিলেন ঘটনাস্থলে’। স্থানীয়দের মতে, আক্রমণের আকস্মিকতায় বহু নিরীহ শ্রমিক ও কর্মী হতাহত হন। হামলার ভিডিয়ো ফুটেজে বিস্ফোরণের ভয়াবহতা, ধ্বংসস্তূপ ও সাধারণ মানুষের প্রাণহানির দৃশ্য দেখা যায়।

মূলত রাস ইসা, হুদাইদাহ ও আস-সালিফ; এই তিনটি বন্দর দিয়েই ইয়েমেনে প্রায় ৭০ শতাংশ আমদানি ও ৮০ শতাংশ মানবিক সহায়তা প্রবেশ করে। রাষ্ট্রসঘের মতে, রাস ইসা বন্দর ও তেল পাইপলাইন হল ‘অপরিহার্য ও অপরিবর্তনীয় অবকাঠামো’।

পশ্চিম এশিয়ায় মোতায়েন মার্কিন সেনার সেন্ট্রাল কমান্ডের (সেন্টিকম) তরফে জানানো হয়েছে, হুথি বিoোহীদের জ্বালানির উৎসে আঘাত হানার উদ্দেশেই এই অভিযান। ওয়াশিংটন জানিয়েছে, তারা ইয়েমেনের হুথিদের অবস্থানগুলোতে হামলা চালিয়ে যাবে যতক্ষণ না লোহিত সাগরে জাহাজ চলাচলের ওপর এই গোষ্ঠীর আক্রমণ বন্ধ হয়।  প্রসঙ্গত, গাজা ভূখণ্ডে ইসরাইলি হামলা শুরুর পরে ইরানের মদতপুষ্ট সশস্ত্র গোষ্ঠী হুথি ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকেই ইয়েমেন উপকূল থেকে ধারাবাহিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে লোহিত সাগরগামী বাণিজ্যিক জাহাজগুলির উপর। পাশাপাশি, ইসরাইলি ভূখণ্ড নিশানা করেও ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ে চলেছে তারা।

গত বছরের ডিসেম্বরে হুথি বাহিনী ইসরাইলে হাইপারসনিক (শধের চেয়ে পাঁচগুণ বা তার বেশি গতিসম্পন্ন) ক্ষেপণাস্ত্র ‘ফিলিস্তিন -২’ দিয়ে হামলা চালিয়েছিল। তারপর মার্চে মার্কিন বাহিনীর দু’দিনের হামলায় অর্ধশতাধিক নিহত হয়েছিল।

ইয়েমেনের উপর যুক্তরাষ্ট্রের বর্বর বিমান হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইরান। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই এই হামলাকে ‘রাষ্ট্রসঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক আইনের একটি সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনের দখলদারিতে এবং সেখানে চলমান গণহত্যায় ইসরাইলকে পূর্ণ সমর্থন দিতে গিয়েই যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনে এই আগ্রাসন চালিয়েছে। এতে যুক্তরাষ্ট্র নিজেই ইসরাইলের অপরাধে একপ্রকার সহযোগী ও অংশীদারে পরিণত হয়েছে।’