২৭ মার্চ ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১৩ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংসদে ওয়াকফ বিল, সর্বশক্তি দিয়ে বিরোধিতা করবে কংগ্রেস: রমেশ

সুস্মিতা
  • আপডেট : ৮ মার্চ ২০২৫, শনিবার
  • / 3

নয়াদিল্লি: সংসদে ওয়াকফ বিলের বিরোধিতা করবে কংগ্রেস। শুক্রবার দলের তরফে স্পষ্ট করে দিয়েছেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী জয়রাম রমেশ। তিনি জানান, সর্বশক্তি দিয়ে সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক উপায়ে কংগ্রেস এই বিল পাসের বিরোধিতা করবে।
সোমবার থেকেই সংসদে শুরু হচ্ছে বাজেটের দ্বিতীয় পর্বের অধিবেশন। সেখানে মোদি সরকার এই বিল পেশ করবে বলে খবর। এমনিতেই মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ড এবং মুসলিমদের সমস্ত সংগঠন একযোগে এই বিলের বিরোধিতা জারি রেখেছে। তাদের অভিযোগ, সরকার যাতে ওয়াকফ সম্পত্তির দখল নিতে পারে সেজন্য এই আইন করা হচ্ছে। এই বিল সংসদে পাস হয়ে গেলে তা মুসলিমদের উপর একটি বড় আঘাত হবে। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস সংসদে বিলের বিরোধিতা করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, লোকসভায় বিল পাস হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও রাজ্যসভায় চাপের মুখে পড়তে হতে পারে গেরুয়া শিবিরকে। কারণ, সংসদের উচ্চকক্ষে এনডিএ’র সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই।

আরও পড়ুন: অসমের সঙ্গে রেলপথে জুড়ছে ভুটান

শুক্রবার কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ এই প্রসঙ্গে বলেন, তাঁর দল সংসদে ওয়াকফ (সংশোধনী) বিলের বিরোধিতা করার জন্য ‘সমস্ত গণতান্ত্রিক পথ’ অনুসরণ করবে। একইসঙ্গে তিনি জানান, ইন্ডিয়া জোটও এই বিলের বিষয়বস্তু, উদ্দেশ্য এবং ব্যাপ্তির বিরুদ্ধে। বিষয়টিকে যে তাঁরা হালকাভাবে নিচ্ছেন না তা স্পষ্ট করে দিয়ে রমেশ বলেন, বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর আগেই যৌথভাবে বিলটির বিরোধিতা করার জন্য ইন্ডিয়া জোটের দলগুলির সঙ্গে পরামর্শ করা হবে। ঠিক হবে কীভাবে সংসদে ঐক্যবদ্ধভাবে এই বিলের প্রতিবাদ জানানো হবে। রমেশ জানান, সংসদের উভয় কক্ষে বিরোধী দলের নেতারা শীঘ্রই এই বিষয়ে ইন্ডিয়া জোটের দলগুলির সঙ্গে সমন্বয় করবে। এক সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কংগ্রেসের এই প্রবীণ নেতা জানান, এতে কোনও সন্দেহ নেই যে, ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল সম্ভবত বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধেই পেশ করা হবে। আর এতেও কোনও সন্দেহ নেই, কংগ্রেস বিলটির তীব্র বিরোধিতা করবে। রমেশের কথায়, ‘আমি মনে করি ইন্ডিয়া জোটের দলগুলি ওয়াকফ বিলটির বিষয়বস্তু, উদ্দেশ্য এবং ব্যাপ্তির বিরোধিতা করছে। সংসদের যৌথ কমিটি যেভাবে বিলটিকে বুলডোজ করেছে তা গোটা প্রক্রিয়াকে উপহাসে পরিণত করেছে। কংগ্রেস সর্বস্ব শক্তি দিয়ে এই বিলটির বিরোধিতা করবে কারণ এটি ছিল সবচেয়ে অপ্রয়োজনীয় এবং সংসদের যৌথ কমিটি যেভাবে কাজ করেছিল তা ছিল চূড়ান্ত ‘অগণতান্ত্রিক’। কিছু সাক্ষীকে বেছে বেছে ডাকা হয়েছিল, কিছু সাক্ষীকে ডাকা হয়নি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে সম্ভবত সংসদীয় ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একটি যৌথ কমিটি বিলটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা ছাড়াই রিপোর্ট পেশ করে দিয়েছে। বিলটি নিয়ে কংগ্রেস ইন্ডিয়া জোটের দলগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করছে। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, লোকসভায় বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধি খুব শীঘ্রই সমস্ত বিরোধী নেতার সঙ্গে কথা বলবেন।’

আরও পড়ুন: অসমের ২০টি ব্লকে সভাপতির নাম ঘোষণা তৃণমূলের

কেন্দ্রের তৃতীয় মোদি সরকারের অন্যতম শরিক দল টিডিপি ও জেডিইউ এই বিলকে সমর্থন করবে কি না, সে-প্রসঙ্গে রমেশ বলেন, টিডিপি ও জেডিইউ সাংসদরাও এই বিলটি খুবই অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে এটুকু বলতে পারি। কিন্তু তাদেরও বিজেপির প্রতি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে এটা ঠিক জেডিইউয়ের প্রধান নীতীশ কুমার এবং টিডিপি প্রধান চন্দ্রবাবু নাইডু কী করবেন তা শুধু তাঁরাই জানেন, তবে এবার তাঁদের ‘আসল চেহারা’ প্রকাশ পাবে।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় সম্প্রতি সংশোধিত ওয়াকফ বিল পাস হয়ে গিয়েছে। তার আগে বিরোধীদের আনা ৪৪টি সংশোধনীর প্রত্যেকটিই বাতিল করে দিয়েছিল যৌথ সংসদীয় কমিটি বা জেপিসি। এমনকী বিরোধীদের আপত্তিপত্র বা ‘ডিসেন্ট নোট’ও রাখা হয়নি জেপিসি রিপোর্টের মধ্যে। বিরোধীদের দাবি, সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক উপায়ে জেপিসি তাদের সংশোধনীগুলি খারিজ করে দিয়েছে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

সংসদে ওয়াকফ বিল, সর্বশক্তি দিয়ে বিরোধিতা করবে কংগ্রেস: রমেশ

আপডেট : ৮ মার্চ ২০২৫, শনিবার

নয়াদিল্লি: সংসদে ওয়াকফ বিলের বিরোধিতা করবে কংগ্রেস। শুক্রবার দলের তরফে স্পষ্ট করে দিয়েছেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী জয়রাম রমেশ। তিনি জানান, সর্বশক্তি দিয়ে সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক উপায়ে কংগ্রেস এই বিল পাসের বিরোধিতা করবে।
সোমবার থেকেই সংসদে শুরু হচ্ছে বাজেটের দ্বিতীয় পর্বের অধিবেশন। সেখানে মোদি সরকার এই বিল পেশ করবে বলে খবর। এমনিতেই মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ড এবং মুসলিমদের সমস্ত সংগঠন একযোগে এই বিলের বিরোধিতা জারি রেখেছে। তাদের অভিযোগ, সরকার যাতে ওয়াকফ সম্পত্তির দখল নিতে পারে সেজন্য এই আইন করা হচ্ছে। এই বিল সংসদে পাস হয়ে গেলে তা মুসলিমদের উপর একটি বড় আঘাত হবে। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস সংসদে বিলের বিরোধিতা করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, লোকসভায় বিল পাস হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও রাজ্যসভায় চাপের মুখে পড়তে হতে পারে গেরুয়া শিবিরকে। কারণ, সংসদের উচ্চকক্ষে এনডিএ’র সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই।

আরও পড়ুন: অসমের সঙ্গে রেলপথে জুড়ছে ভুটান

শুক্রবার কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ এই প্রসঙ্গে বলেন, তাঁর দল সংসদে ওয়াকফ (সংশোধনী) বিলের বিরোধিতা করার জন্য ‘সমস্ত গণতান্ত্রিক পথ’ অনুসরণ করবে। একইসঙ্গে তিনি জানান, ইন্ডিয়া জোটও এই বিলের বিষয়বস্তু, উদ্দেশ্য এবং ব্যাপ্তির বিরুদ্ধে। বিষয়টিকে যে তাঁরা হালকাভাবে নিচ্ছেন না তা স্পষ্ট করে দিয়ে রমেশ বলেন, বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর আগেই যৌথভাবে বিলটির বিরোধিতা করার জন্য ইন্ডিয়া জোটের দলগুলির সঙ্গে পরামর্শ করা হবে। ঠিক হবে কীভাবে সংসদে ঐক্যবদ্ধভাবে এই বিলের প্রতিবাদ জানানো হবে। রমেশ জানান, সংসদের উভয় কক্ষে বিরোধী দলের নেতারা শীঘ্রই এই বিষয়ে ইন্ডিয়া জোটের দলগুলির সঙ্গে সমন্বয় করবে। এক সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কংগ্রেসের এই প্রবীণ নেতা জানান, এতে কোনও সন্দেহ নেই যে, ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল সম্ভবত বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধেই পেশ করা হবে। আর এতেও কোনও সন্দেহ নেই, কংগ্রেস বিলটির তীব্র বিরোধিতা করবে। রমেশের কথায়, ‘আমি মনে করি ইন্ডিয়া জোটের দলগুলি ওয়াকফ বিলটির বিষয়বস্তু, উদ্দেশ্য এবং ব্যাপ্তির বিরোধিতা করছে। সংসদের যৌথ কমিটি যেভাবে বিলটিকে বুলডোজ করেছে তা গোটা প্রক্রিয়াকে উপহাসে পরিণত করেছে। কংগ্রেস সর্বস্ব শক্তি দিয়ে এই বিলটির বিরোধিতা করবে কারণ এটি ছিল সবচেয়ে অপ্রয়োজনীয় এবং সংসদের যৌথ কমিটি যেভাবে কাজ করেছিল তা ছিল চূড়ান্ত ‘অগণতান্ত্রিক’। কিছু সাক্ষীকে বেছে বেছে ডাকা হয়েছিল, কিছু সাক্ষীকে ডাকা হয়নি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে সম্ভবত সংসদীয় ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একটি যৌথ কমিটি বিলটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা ছাড়াই রিপোর্ট পেশ করে দিয়েছে। বিলটি নিয়ে কংগ্রেস ইন্ডিয়া জোটের দলগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করছে। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, লোকসভায় বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধি খুব শীঘ্রই সমস্ত বিরোধী নেতার সঙ্গে কথা বলবেন।’

আরও পড়ুন: অসমের ২০টি ব্লকে সভাপতির নাম ঘোষণা তৃণমূলের

কেন্দ্রের তৃতীয় মোদি সরকারের অন্যতম শরিক দল টিডিপি ও জেডিইউ এই বিলকে সমর্থন করবে কি না, সে-প্রসঙ্গে রমেশ বলেন, টিডিপি ও জেডিইউ সাংসদরাও এই বিলটি খুবই অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে এটুকু বলতে পারি। কিন্তু তাদেরও বিজেপির প্রতি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে এটা ঠিক জেডিইউয়ের প্রধান নীতীশ কুমার এবং টিডিপি প্রধান চন্দ্রবাবু নাইডু কী করবেন তা শুধু তাঁরাই জানেন, তবে এবার তাঁদের ‘আসল চেহারা’ প্রকাশ পাবে।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় সম্প্রতি সংশোধিত ওয়াকফ বিল পাস হয়ে গিয়েছে। তার আগে বিরোধীদের আনা ৪৪টি সংশোধনীর প্রত্যেকটিই বাতিল করে দিয়েছিল যৌথ সংসদীয় কমিটি বা জেপিসি। এমনকী বিরোধীদের আপত্তিপত্র বা ‘ডিসেন্ট নোট’ও রাখা হয়নি জেপিসি রিপোর্টের মধ্যে। বিরোধীদের দাবি, সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক উপায়ে জেপিসি তাদের সংশোধনীগুলি খারিজ করে দিয়েছে।